আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৪১

সাহস ডেস্ক

আজ (৬ ডিসেম্বর) ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর আক্রমণে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় পাকিস্থানি হানাদার ও তাদের দোসররা। আকাশে ওড়ে লাল সবুজের স্বাধীন পতাকা। মুক্তির মিছিল ছড়িয়ে পড়ে জেলা থেকে গ্রাম-গ্রামান্তরে।

স্বাধীনতা যুদ্ধে জেলায় প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালীতে। এছাড়া শৈলকুপা থানা আক্রমন, কামান্না, আলফাপুর ও আবাইপুরের যুদ্ধ আজও স্মৃতিতে অম্লান।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ৫ ডিসেম্বর বিকেলে মুক্তি ও মিত্রবাহিনী পাক সেনাদের ঘাঁটি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর সকালে পাক সেনারা ঘাঁটি ছেড়ে মাগুরার দিকে পালিয়ে যায়। অনেক পাক সেনা বন্দি হন। এরপর ঝিনাইদহ জেলা হয় হানাদার মুক্ত। শত্রুমুক্ত ঝিনাইদহ জেলায় হাজার হাজার মানুষ ঘর থেকে রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করতে থাকেন। আর স্বাধীন বাংলার জন্য অপেক্ষা শুরু করে।

ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, পহেলা থেকে ষোল এপ্রিল বিষয়খালী যুদ্ধে ৩৫ জন, ১৪ অক্টোবর আবাইপুর যুদ্ধে ৪১ জন, ২৬ নভেম্বর কামান্না যুদ্ধে ২৭ জনসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলায় মোট ২৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এর মধ্যে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে এই জেলায় দুই জন। তাঁরা হলেন বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও বীর প্রতিক সিরাজুল ইসলাম।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের অনেককে বিভিন্ন স্থানে গণকবর দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আনেকের নাম ঠিকানা আজও মেলেনি। ৬ ডিসেম্বরের আগে ৩ ডিসেম্বর মহেশপুর, ৪ ডিসেম্বর কোটচাঁদপুর, ৫ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ এবং সর্বশেষ ১১ ডিসেম্বর শৈলকুপা উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ঝিনাইদহ আওয়ামী সেচ্ছাসেবক বাহিনীর জেলা কমান্ডার আমির হোসেন মালিতা জানান, ৫ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মিত্র বাহিনী ঝিনাইদহের হলিধানী বাজারে এসে খবর নিতে আসেন।

তিনি আরো জানান, তারপর তারা ৬ ডিসম্বর ভোরে ঝিনাইদহ শহরে প্রবেশ করেন। মিত্র বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন, কর্ণেল বাহেল ও লেঃ কর্ণেল পিকে দাস গুপ্ত। ৬ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় ঝিনাইদহের ইউনিট কমান্ডার হিসেবে তিনিসহ ইউনিয়ন কমান্ডার রজব আলী, বাকুয়া গ্রামের মরহুম মনিরুল ইসলাম, নারিকেল বাড়িয়ার বুলু মিয়া, গাবলা গ্রামের মকছেদ আলীসহ অনেকে মিত্র বাহিনীকে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত ঝিনাইদহে বেসামরিক প্রশাসন চালু করার প্রস্তাব দেন।

আমির মালিতা বলেন, তখনও সারা দেশে সামরিক শাসন চলছে। বাংলাদেশের প্রথম ঝিনাইদহ জেলায় বেসামরিক প্রশাসন চালুর ফলে পাকিমুক্ত হয় ঝিনাইদহ।

এদিকে হানাদারমুক্ত দিবস পালন উপলক্ষ্যে সোমবার ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক কর্মসুচি গ্রহন করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত