অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের বিষয়টি আলোচিত হয়

প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১৮:১০

অনলাইন ডেস্ক
ছবি: আকবর হোসেন সুমন

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাপ অব্যাহত রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বনেতাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গা সংকটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে।

সোমবার (৪ অক্টোবর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান এবং উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন আলোচনা ও বৈঠকে অংশ নেওয়ার বিষয়ে অবহিত করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতে টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই কেবল এ সংকটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানাই। 

তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যখাতে নারীদের অবদানের কথা তুলে ধরি। আমি তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব গঠন এবং নারী নেতৃত্বে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করি। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে উল্লেখ করে আমি কয়েকটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানাই। 

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করা; রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি জাতিসংঘ উন্নয়ন সহযোগীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর; রোহিঙ্গাদের উপর সংঘটিত সহিংসতা ও জাতিগত নিধনের বিচার নিশ্চিত করতে আইসিজেসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে চলমান প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানাই। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার প্রায় দুই বছর পর এবারই প্রথম আমি দেশের বাইরে সশরীরে কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিই। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে আমার অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের মূল সভা ও সাইড ইভেন্ট মিলিয়ে আমি সর্বমোট ১০টি সভা ও ৮টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিই। ৭৬তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্ক পর্বের উদ্বোধনী দিনেও আমি যোগ দিই। 

তিনি বলেন, এবারের অধিবেশনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল করোনা মহামারি থেকে টেকসই উত্তরণ। কোভিড-১৯ টিকার সর্বজনীন প্রাপ্যতা, সহজলভ্যতা ও মহামারি থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার স্বভাবতই আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি, বর্ণবাদ, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট তথা এসডিজি, পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে।  আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় নতুন আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে সবুজ প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের পক্ষে বক্তব্য রাখি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লগ অ্যান্ড ভ্যাসের এবং জলবায়ুজনিত কারণে বাস্তচ্যুত জনগণের পুনর্বাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ যে অবিচলভাবে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার তারই বিশ্ব স্বীকৃতি। আমি আমার ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যে দেশের জনগণকে এই পুরস্কার উৎসর্গ করি। 

সাহস২৪.কম/এমআর