ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমে হতাশ নাগরিক প্রতিনিধিরা

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২১, ২২:১৮

রাজধানীতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে দুই সিটি করপোরেশনের উপর হতাশ নাগরিক প্রতিনিধিরা। সিটি করপোরেশনের সঠিক কর্মপরিকল্পনার অভাবে নগরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলছেন তারা। এর সঙ্গে অবিলম্বে দুই সিটি কর্পোরেশনে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

২৮ আগস্ট (শনিবার) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধনে এসব দাবি জানান নাগরিক প্রতিনিধিরা। 

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, মুক্তবায়ু সেবন সংস্থা, সুবন্ধন সামাজিক কল্যাণ সংগঠন, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটি, সচেতন নগরবাসী, পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম, গ্রিনফোর্স, ডাব্লিউবিট্রাস্ট, বানিপা, বিডিক্লিক, বিসিএইচআরডি, বাংলাদেশ গ্রিনরুফ মুভমেন্ট, সূচনা ও ইয়ুথ সান এর সম্মিলিত উদ্যোগে ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম জোরদার ও গণউদ্যোগ বৃদ্ধি করার’ দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণের দায় নাগরিক, সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকারের। তবে ঘরে ঘরে প্রবেশ করে মশা মারা যেমন ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের কাজ নয়, তেমনি ঘরের বাইরে এডিস মশার ডিম পাড়া ও বংশবৃদ্ধি রোধ করা সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব। যেখানে সেখানে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত পাত্র, মাটির হাঁড়ি, টায়ার, ক্যান যার মধ্যে জমা পানি থাকে বা কোনও গর্ত যেখানে বৃষ্টি হলেই পানি জমতে পারে সেখানেই নির্মূলের ব্যবস্থা করতে হবে।  এছাড়া নগরীর নালা-নর্দমা, আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, মশা-মাছির প্রজননস্থল ধ্বংসে লার্ভিসাইডিং ও মশা নিধনে ফগিং করা দুই সিটি করপোরেশনের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় কিছু দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন নাগরিক প্রতিনিধিরা। এগুলো হলো- ডেঙ্গুমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সর্বস্তরের জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা, পরিবেশবান্ধব কার্যকর রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে মশার লার্ভা ধ্বংস করা ও উড়ন্ত মশা মারা, এডিস মশার প্রজনন, বিস্তার, প্রতিরোধে ও প্রতিকার নিয়ে নিয়মিত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা, মশকনিধন কার্যক্রম বছরব্যাপী নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জনস্বাস্থ্যের ওপর যে বৈরী প্রভাব পড়ছে তা নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে মোকাবিলার পথ খুঁজে বের করা।

মানববন্ধনে পবার চেয়ারম্যান আবু নাছের খান বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো। তারা প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এডিসের লার্ভা নিধন অভিযান চালাচ্ছে। মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজে মাঠে নেমে তা তদারকি করছেন। এতে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে। কিন্তু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। ফলে দক্ষিণে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এটা খুবই হতাশার খবর।

তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। ফলে তার কাজ করারও সুযোগ বেশি। আমরা আশা করি, দক্ষিণে মশকনিধন কার্যক্রম আরও জোরালো হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বৈশ্বিক মহামারী করোনার মতো ভ্যারিয়েন্ট বদলাচ্ছে ডেঙ্গু। চলতি মাসে ২৭ দিনে ২৮ জন ও এ বছরে মোট ৪০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। করোনা মহামারির মধ্যে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে থাকে। শুধু জুলাই মাসেই দুই হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। গতকাল শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ছয় হাজার ৬৪৬ জন।

সাহস২৪.কম/এসটি/এসএ.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত