জুস ফ্যাক্টরিতে আগুন, ৫২ মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২১, ১৪:০৭

সাহস ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতা কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ গ্রুপের সেজান জুসের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ৫২ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক।

শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে এই কারখানায় লাগা আগুনে রাতে দু্ইজনের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং একজন হাসপাতালে মারা যান।

শুক্রবার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। তারা ভবনটিতে অসংখ্য পুড়ে যাওয়া মরদেহ দেখতে পান। পরে একে একে ৫২টি মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়। দুপুর আড়াইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলছিল। তবে এখনো আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়নি।

এদিকে কারখানার অনেক শ্রমিক নিখোঁজ থাকায় তাদের স্বজনরা ছবি নিয়ে ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন বলে জানা গেছে।

এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মিনা আক্তার (৪০) ও স্বপ্না রানী নামে দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মুরসালিন (২২) নামে এক কর্মী রাত ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার কামরুল আহসান জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে সাততলা ভবনে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং দমকল বাহিনীর ১৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ঢামেক হাসপাতালে এবং ১৬ জনকে রূপগঞ্জ ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. শাহাদাত হোসেন দুই শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে তাঁরা হলেন, নাহিদ (২৩), মনজুরুল ইসলাম (২৫), মহসিন হোসেন (৩২), আবু বকর সিদ্দিক (৪০), আমেনা বেগম (৩২), ফাতেমা আক্তার (২৩), মহসিন (২ ৭) ও মাজেদা (২৮)।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, ধোঁয়াজনিত কারণে শ্বাসকষ্ট হওয়ায় আহতদের মধ্যে তিনজনকে ঢামেকের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

আহতদের একজন আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ভবন থেকে তাড়াহুড়ো করে লাফিয়ে লাফিয়ে নামতে গিয়ে আমরা আহত হয়েছি। কারখানার ভিতরে সাত থেকে আট হাজার শ্রমিক কাজ করায় আহত ও নিহতদের সংখ্যা বাড়তে পারে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. আব্দুল আল আরেফিন বলেন, প্রাথমিকভাবে শুনেছি ওয়েল্ডিংয়ের কারণে সেজান জুসের কারখানায় আগুন লেগেছে। তবে আসলে কী কারণে আগুন লেগেছে তা তদন্তের পর জানা যাবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত