ইসলামি বক্তা ত্ব-হাসহ চারজনকে উদ্ধারে কাজ করছে ডিবি

প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২১, ১৬:৩১

সাহস ডেস্ক

ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ নিখোঁজ চারজনকে উদ্ধারে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ তথ্য জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কথা জানান।

বিভিন্ন সময়ে নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে ডিবি ভূমিকা রেখেছে। আবু ত্ব-হাসহ চারজনের বিষয়ে ডিবি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ত্ব-হাসহ চার ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে রংপুরে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন আফসানুল আদনান ওরফে আবু ত্ব-হা আদনান, আমির উদ্দিন, ফিরোজ আলম ও আব্দুল মুহিত আনছারী।

এর আগে গতকাল বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ত্ব-হার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার। তিনি বলেন, তিনি নিরীহ মানুষ, ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন, নয়তো আমাকে তার কাছে নিয়ে যান।

ত্ব-হার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার বলেন, যদি সত্যিকার অর্থে তিনি কোনো অপরাধে যুক্ত থাকেন তাহলে রাষ্ট্রীয় আইনে তার বিচার হোক। আমি কিছু বলব না। তিনি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন। আমি এবং কিছু যুবক ছাড়া তার পাশে কেউ নেই।

তিনি বলেন, চারজন মানুষকে গাড়িসহ নিয়ে যাওয়া কোনো প্রাইভেট (ব্যক্তিগত) কাজ নয়। রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পথে বিকেল ৪টার দিকে তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়। দুটি মোটরসাইকেল তাদের অনুসরণ করছিল। তিনি (ত্ব-হা) বলছিলেন, দোয়া করো যেন কিছু না হয়। এর ২০ থেকে ২৪ মিনিট পর ফোন করে জানান বাইকগুলো চলে গেছে।

জিও পলিটিক্স নিয়ে কথা বলাই কাল হলো কিনা সন্দেহ ত্ব-হার স্ত্রীর। খুতবা ও বক্তব্যে জিও পলিটিক্স নিয়ে কথা বলতেন আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। ফিলিস্তিন-ইসরায়েস ইস্যুতে কথা বলতেন তিনি।

আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রী বলেন, আমার মনে এখন অনেক কিছু মনে হয়। তিনি জিও পলিটিক্স নিয়ে কথা বলতেন। ইন্টারন্যাশনাল গোয়েন্দাদের বিষয় হতে পারে।

তিনি বলেন, ‌ঘটনার দিন বিকেল ৩টার দিকে বগুড়ার একটি প্রোগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন ত্ব-হা, তার দুই সহযোগী ও প্রাইভেটকারচালক আমির। উদ্দেশ্য ছিল প্রোগ্রাম শেষে তিনি ঢাকায় আমার কাছে আসবেন। কিন্তু বিকেল ৪টার দিকে আমি তাকে ফোন করে বলি রাতে বাসায় ফিরে কি খাবা? কি রান্না করবো? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি রেগে যান আমার ওপর। রেগে গিয়ে ত্ব-হা বলেন আমাদের প্রাইভেটকারের পেছনে দুটি বাইক ফলো করছে। আমার জন্য দোয়া করো, আমি যেন ঠিকভাবে বাসায় পৌঁছাতে পারি। এর কিছুক্ষণ পরে তিনি নিজেই আমাকে ফোন করে বলেন বাইক দুটি আর দেখা যাচ্ছে না। তুমি রান্না করো, আমরা চারজন বাসায় এসে ভাত খাবো।

সাবিকুন্নাহার বলেন, তার সঙ্গে যখনই কথা হয় তখনই তিনি লোকেশনসহ আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে স্ক্রিনশট পাঠান। ওইদিনও একাধিকবার আমাকে লোকেশন পাঠিয়েছেন। রাত ২টার দিকে সর্বশেষ আমি তাকে ফোন করি। কিন্তু তিনি ঘুমানোর কারণে আমার ফোন রিসিভ করতে পারেননি। ঘুম ভাঙার পরে রাত ২টা ৩৭ মিনিটে একটা ম্যাপ শেয়ার করেন। তখন আমি ঘুমাচ্ছিলাম। এরপর তার মেসেজ দেখে ঘুম থেকে উঠে খাবারের ব্যবস্থা করতে যাই। তার ম্যাপে দেখাচ্ছিল বাসায় পৌঁছাতে ১৮ মিনিট লাগবে। এরপর অপেক্ষা করতে করতে রাত ৩টার দিকে তার নম্বরে ফোন করি। কিন্তু তখন থেকেই তার মোবাইল বন্ধ পাই। এরপর প্রাইভেটকারচালক আমিরের নম্বরে ফোন করি। তার মোবাইলও বন্ধ পাই। তখন আমার সন্দেহ হয়। এভাবে অপেক্ষা করতে করতে ভোর ৫টা বেজে যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে ত্ব-হার স্ত্রী বলেন, বগুড়ায় যে প্রোগ্রাম হওয়ার কথা ছিল সেটি হয়নি। তিনি রাস্তায় থাকার কারণে বিস্তারিত কথা বলার সুযোগ ছিল না। ভেবেছিলাম বাসায় আসার পর তাকে বিস্তারিত জিজ্ঞেস করবো। আমার ওপর রেগে যাওয়ার কারণে জিজ্ঞাসা করিনি। শুধু এতটুকুই জানি বগুড়ায় তার প্রোগ্রামটি হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত