৭০টি বাঘ হত্যাকারী দুর্ধর্ষ বাঘ হাবিব গ্রেপ্তার!

প্রকাশ | ৩০ মে ২০২১, ১৭:৫১ | আপডেট: ৩০ মে ২০২১, ১৮:০৯

অনলাইন ডেস্ক

অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের তালিকাভুক্ত বাঘ দুর্ধর্ষ শিকারী বাঘ হাবিবকে  (হাবিব তালুকদার) গ্রেপ্তার করেছে শরণখোলা থানা পুলিশ। 

২৮মে (শুক্রবার) দিবাগত রাতে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বনসংলগ্ন মধ্য সোনাতলা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাঘ হাবিব ওরফে হাবিব তালুকদার (৫০)। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বন বিভাগ ও স্থানীয়দের কাছে ‘বাঘ হাবিব’ নামেই পরিচিত তিনি।

বাঘ শিকার করাই তাঁর নেশা। বিভিন্ন সূত্র মতে, গত ২০ বছরে কম করে হলেও তাঁর হাতে ৭০টি বাঘ মারা পড়েছে। তাঁর নামে রয়েছে আটটি বন অপরাধের মামলা। এর মধ্যে তিনটিতে রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এত মামলার পরেও শিকারের নেশা থেকে ফেরাতে পারেনি তাঁকে। বনে নিষিদ্ধ, তবুও গোপনে ঢুকে একের পর এক শিকার করেন বাঘ, হরিণ ও কুমির। অবশেষে গত শুক্রবার রাতে পুলিশের হাতে আটক হন দুর্ধর্ষ এই বাঘ শিকারি।

হাবিবের নামে আটটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি বাঘ হত্যার মামলা। অথচ তিনি গত ২০ বছরে ৭০টির মতো বাঘ হত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। তা ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে হরিণ শিকারের মামলা রয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে তিনটিতে রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। 

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বনসংলগ্ন মধ্য সোনাতলা গ্রামে দুর্ধর্ষ বাঘ হাবিরে বাড়ি। তাঁর বাবা কদম আলী তালুকদার সুন্দরবনের এক সময়ের দুর্ধর্ষ বনদস্যু ছিলেন। বনের পাশে বাড়ি হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। সেই থেকে বনের সব এলাকা তাঁর নখদর্পণে। তাঁর গোটা পরিবারই বন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। 

শরণখোলা থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান বলেন, বাঘ শিকারী বাঘ হাবিবের নামে শরণখোলা থানায় তিনটি ওয়ারেন্ট ছিল। তাকে দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। পরে সোর্সের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শরণখোলা রেঞ্জ বন কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, হাবিব তালুকদার বাঘ হাবিব নামে বনবিভাগের তালিকাভুক্ত অপরাধী। তার হাতে গত ২০ বছরে কমপক্ষে ৭০টি বাঘ মারা পড়েছে বলে এর আগে বন বিভাগের কাছে সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তার নামে ৮ টি বন অপরাধের মামলা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে।

শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাঘ শিকারী হাবিব বনবিভাগ ও পুলিশের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড। তাকে অনেক আগে থেকেই সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তার পরও গোপনে বনে ঢুকে বন্যপ্রাণি শিকার করেন। তার নামে একাধিক মামলা থাকার পরও এই সে অপরাধ থামায়নি। এর পেছনে একাধিক শক্তিশালী চক্র জড়িত রয়েছে।