দুই টাকায় ঈদের পোশাক

প্রকাশ : ১১ মে ২০২১, ০৪:২০

সাহস ডেস্ক

ঈদ খুবই আসন্ন। শেষ মুহুর্তে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু বছরব্যাপী করোনাভাইরাসের থাবায় অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এবারের ঈদ হয়তো ততটা রঙিন হয়ে উঠবে না।

সোমবার (১০ মে) বিকেল, চট্টগ্রাম শহরের টাইগার পাস বস্তির পাশে বসেছে একটি অস্থায়ী দোকান। সেখানে চলছে ঈদের পোশাকের বেচাকেনা। তবে দোকানটিতে শুধুই বাচ্চাদের পোশাক। ক্ষুদে ক্রেতাদের পোশাকের বিক্রেতারা আবার কেউই পেশাদার কাপড় ব্যবসায়ী নন, তারা চট্টগ্রামে মেট্রোপলিটন পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা!

পরানি নামে একটি শিশু রানি কালারের একটি জামার দিকে অপলক তাকিয়ে ছিল। সাময়িক দোকানির সেজে বসা এক পুলিশ কমকর্তা পরানির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সে জানায় জামাটি তার পছন্দ হয়েছে। দোকানি মাত্র দুই টাকায় জামাটি পরানির কাছে বিক্রি করে দেন!

দুই ঘণ্টা স্থায়ী ওই দোকানে পরানির মতো সাজিদ, সুমন, পুতুলসহ প্রায় ৫০ জন শিশু ঈদের কেনাকাটা করেছে। এ সময় তাদের প্রাণোচ্ছল হাসি ও আনন্দই বলে দিচ্ছিল, ঈদের দুইদিন আগেই ঈদের আনন্দ তাদেরকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। “যাত্রী ছাউনী” নামে একটি সামাজিক সংগঠন এই আয়োজন করতে সহায়তা করেছে।

সাজিদ তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে জানায়, আমার জমানো টাকা দিয়ে আমি আমার পছন্দ মত পাঞ্জাবি কিনেছি। এই পাঞ্জাবি পরে আমি ঈদের দিন নামাজ পড়তে যাব। 

আয়োজনটির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি,দক্ষিণ) বিজয় বসাক। তিনি বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ঈদের আনন্দ সবার জন্য। কিন্তু এই আনন্দ সবার প্রাণে একইভাবে ছুঁয়ে যায় না। আমরা হয়তো অল্প কয়েকজন বাচ্চার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি, সংখ্যা বিবেচনায় এটি খুব ক্ষুদ্র। তবে সারাদেশে এভাবে মানুষ যদি এগিয়ে আসে তাহলে সমতার দেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।

বিজয় বসাক বলেন, আমরা চাইলেই শিশুদের বিনামূল্যে জামা দিতে পারতাম। কিন্তু প্রতীকী মূল্য হিসেবে দুই টাকা করে টাকা নিয়েছি। এই টাকা নেওয়ার উদ্দেশ্য হল, শিশুমনে যেন এমন ধারণা না হয়, তাদেরকে কেউ করুণা করছে, দয়া করছে।

সবার প্রতি সামাজিক ন্যায় বিচারের স্বপ্ন দেখেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শব্দটি যখন বিলুপ্ত হয়ে যাবে, তখনই সুন্দর সমাজ গড়ে উঠবে। গড়ে উঠবে একটি সমতার বাংলাদেশ, সমতার পৃথিবী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত