টঙ্গী-কালিয়াকৈরে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা-গুলি

প্রকাশ : ১০ মে ২০২১, ১৮:২২

সাহস ডেস্ক

ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গী ও কালিয়াকৈরের দুটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও ভাংচুর করেছে। এসময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আটজন পুলিশ সদস্য ও অন্তত ১৮ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

সোমবার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আহতরা হলেন- মিজানুর রহমান (২৪), হাসান মিয়া (২৬), রুবেল মিয়া (২২), জাহিদ হোসেন (২৫), রনি (২৪), মামুন (২৬), সোহেল (২২), রুবেল হোসেন (২৪), ইমরান হোসেন (২৪), রাজীবুল ইসলাম (২৬), মামুন মিয়া (২৭), রবি (২১), লতিফ (১৯), রনি (২২), এহসানুল হক (৩৫), রাজিবুল (২৬), কলি বেগম (২৪), নিজাম উদ্দিন (৩০), সমলা (২৫), ইয়াসিন (২০), হাসিনা (৪০), সাব্বির (২২), সাবিনা (২৫), রিনা বেগম (২০)।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) জালাল হাওলাদার, এএসপি এস আলম, সিটিএসবির এসআই রুবেল, এসআই কামাল হোসেন, পুলিশের এসআই লিটন, কনস্টেবল এনামুল হোসেন। বাকি দুইজন পুলিশ সদস্যের নাম জানা যায়নি।

জানা গেছে, কারখানা কর্তৃপক্ষ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তিনদিনের ঈদের ছুটি ঘোষণা করলেও শ্রমিকরা ১০ দিনের ছুটির দাবিতে এ বিক্ষোভ করে।

আহত শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের এক পোশাক শ্রমিক অফিসকক্ষে গিয়ে মালিক পক্ষের সাথে ঈদের ছুটির বিষয়ে কথা বলেন। তিনি আমাদের পক্ষ থেকে ১০ দিনের ছুটি চান। মালিকপক্ষ থেকে সাত দিনের ছুটি মঞ্জুর করা হয়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। এরপর তিনি বের হলে পুলিশ এসে তার মাথায় আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়। পরে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে তাকে আঘাতের কারণ জানতে চান। এ সময় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।

টঙ্গীর হামীম গ্রুপের পোশাক শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সরকারিভাবে ঘোষিত তিন দিনের ছুটির পরিবর্তে শ্রমিকরা ১০ দশ দিনের ছুটি দাবি করে। কর্তৃপক্ষ ৭ দিনের ছুটি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকেরা সোমবার সকালে ১০ দিনের ছুটির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে আমাদের উপর নির্যাতন শুরু হয়। পুলিশ গিয়ে আমাদের ওপর হামলা ও গুলি করে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জালাল হাওলাদার জানান, শ্রমিকরা সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মহাসড়ক অবরোধ করে। পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে গেলে শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। এসময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও শ্রমিক আহত হন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত