পশু চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২১, ২১:০৫

সাহস ডেস্ক

বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় এশিয়ার শত বিজ্ঞানীর তালিকায় যে তিনজন বাংলাদেশি নারী জায়গা করে নিয়েছেন তাদের একজন সালমা সুলতানা। পশু চিকিৎসার শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখার জন্য তাকে  এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী এশিয়ান সায়েন্টিস্টে ১০০ জন বিজ্ঞানীর এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

সালমা সুলতানা একজন কৃষিবিদ। মূলত তিনি খামারি ও ক্ষুদ্র কৃষকদের নিয়ে কাজ করেন এবং পশুর রোগ নির্ণয়ের জন্য ল্যাবরেটরিসহ একটি ভেটেরিনারি হাসপাতালও গড়ে তুলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় তিনি দেখতে পান যে দেশে পশু চিকিৎসায় একটা শূন্যতা রয়েছে এবং সে কারণেই তিনি এবিষয়ে কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহী হন।

সালমা সুলতানা বলেন, আমাদের পশু চিকিৎসক রয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যায় সহকারী বা ভেটেরিনারি নার্স নেই। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দেখি কেউ নেই যিনি আমাকে একটু সাহায্য করতে পারেন। ডাক্তাররা কিন্তু সবকিছু করতে পারে না। আমাদের ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রেও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। তখন মনে হলো যে এখানে কাজের একটা বড় সুযোগ রয়ে গেছে।

সালমা সুলতানা বলেন, আমাদের কৃষি খাতে অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু গবাদি পশু চাষের বেলায় কৃষকরা এখনও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে না। এছাড়াও এবিষয়ে তাদের সাধারণ জ্ঞানেরও অভাব রয়েছে।

এবিষয়ে তিনি বলেন, গরু যেখানে রাখা হয় সেই গোয়াল ঘরের পরিবেশ খুব একটা উন্নত নয়। একটা গোয়াল ঘরের ছাদ যে ১৪ থেকে ১৮ ফুট উচু হতে হবে সেটাও অনেকেই জানে না। এমনকি গবাদি পশুর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাপারে তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। এবিষয়ে তারা কোনো সাহায্য সহযোগিতাও পাচ্ছে না, যার ফলে তাদের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

গরুচাষিরা আগে ভুষির সঙ্গে পানি মিশিয়ে গরুকে খাওয়াতো। গরুকে ভাত খাওয়ানো হতো। জাউ রান্না করে খাওয়াতো। কিন্তু গরুর পেটের জন্য এসব অনেক ক্ষতিকর। এবিষয়ে তাদের জ্ঞান নেই। আমরা তাদেরকে বলছি আপনারা গরুকে শুকনো খাবার দেন।

সালমা সুলতানা বলেন, আপনি দেখেন ভালো চাল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, মাছের কেজি কতো দেখেন। কিন্তু এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। ফলে তাদের জন্য এটা অনেক লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। কিন্তু জ্ঞানের অভাবের কারণে তারা সেটা অর্জন করতে পারছে না।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক অসুস্থ গরু জবাই হচ্ছে। তাকে হয়তো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় জবাইও করা হচ্ছে। ফলে ওষুধের উপাদানগুলো তার দেহে থেকে যাচ্ছে। সেই মাংসটা আমরা খাচ্ছি। ফলে আমাদের স্বাস্থ্যও একটা হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। কৃষকরা এখন অনেক কিছু জানতে চেষ্টা করছে। তারা ইউটিউব ঘাটছে। একজন খামারি যখন দেখবেন যে দুধের উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে, তখন তিনি নিজে থেকেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইবেন।

এশিয়ান সায়েন্টিস্টে আরও যে দুজন বাংলাদেশি নারী বিজ্ঞানীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে তারা হলেন- আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র-বাংলাদেশের ফেরদৌসি কাদরী। অন্যজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সায়মা সাবরিনা।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত