টিকার মজুদ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ০১:৪৭

সাহস ডেস্ক

কোভিড-১৯ এর টিকার মজুদ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. একে আবদুল মোমেন। তিনি জানান, চীনের উপহারের ছয় লাখ ডোজসহ বাংলাদেশের পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন থাকবে।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ড. মোমেন একথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আমরা একটি লাইনআপ করেছি। আমাদের যথেষ্ট ভ্যাকসিন থাকবে। চীন উপহার হিসেবে ভ্যাকসিনের ছয় লাখ ডোজ দেবে। আমাদের এ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই ... আমরা ঠিক আছি।

বাংলাদেশ চুক্তির মাধ্যমে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) দ্বারা উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ টিকার ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছে। দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের উপহার হিসেবেও বাংলাদেশ টিকার ৩৩ লাখ ডোজ পেয়েছে। ভারত থেকে যে কোনো দেশে প্রেরিত বৃহত্তম পরিমাণ এটি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা একই পৃষ্ঠায় আছি। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিস্তারিত জানে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্বারা বিষয়গুলি চূড়ান্ত করা হবে। রাশিয়া ও বাংলাদেশের দুই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে টিকা সহ-উৎপাদনের প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।

গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাশিয়া বাংলাদেশকে টিকা সহ-উৎপাদনের করার প্রস্তাব দিয়েছে। এটা খারাপ না। আমরা আমাদের বিকল্পগুলো উন্মুক্ত রাখছি। পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকলে রাশিয়া প্রযুক্তি দেবে এবং বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলো এখানে রাশিয়ার টিকা তৈরি করবে। 'এটি সস্তা হবে এবং আশা করি এটি আরও ভাল হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণ টিকাদান কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর উদ্বৃত্ত থাকলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছে।

জলবায়ু সম্পর্কিত মার্কিন রাষ্ট্রপতির রাষ্ট্রদূত জন কেরি সাম্প্রতিক সময়ে তার বাংলাদেশ সফরে  সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা আশ্বাস দিতে পারি, আমাদের গুরুতর গণ টিকাদান কার্যক্রম  শেষ হওয়ার পর উদ্বৃত্ত থাকলে আমরা যে কোনো উপায়ে ভ্যাকসিন পুরোপুরি সরবরাহ করব।

ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ আশা করে ভারত দুই দেশের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) দ্বারা উত্পাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকার অবশিষ্ট ডোজ সরবরাহ করবে। তবে অন্যান্য বিকল্পও উন্মুক্ত রাখবে।

সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার তিন কোটি ডোজ কেনা হয়েছে এবং ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালান গত জানুয়ারিতে আসে এবং কোভিড-১৯ টিকার ২০ লাখ ডোজের দ্বিতীয় চালানটি ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল।

টিকার রপ্তানি বন্ধে ভারতের কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার দাবিসহ বিশ্বব্যাপী টিকার উচ্চ চাহিদার কথা স্বীকার করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী জানান, আমি মনে করি, যেহেতু আমরা অগ্রিম অর্থ প্রদান করে ব্যবস্থা করেছি সেহেতু এই দাবি আমাদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। ভারত ঘোষণা করেছে যে সময়সূচি অনুসারে টিকা সরবরাহ করা হবে। এবং আমরা এটি বিশ্বাস করি।

চীন বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহের ব্যাপারে একবার অনেক আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) কর্তৃক তাদের টিকা অনুমোদিত না হওয়ায় বাংলাদেশ তখন অনিচ্ছুক ছিল।

ডা. মোমেন বলেন, চীন তাদের বিশাল জনসংখ্যার জন্য টিকা পরিচালনা করে এবং ৫০টিরও বেশি দেশে প্রমাণ করা ছাড়াই তাদের টিকাকে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন বলেছে। আমরা তাদের সাথে (চীন) আবার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি যেন তারা আমাদের সহায়তা করতে পারে।

রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ) জানিয়েছে, ভারত রাশিয়ান স্পুটনিক ভি কোভিড-১৯ টিকা ব্যবহারেরও অনুমোদন দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এই টিকা পেতে প্রতিবেশী ভারতের সাথে প্রথম হাত মেলানো কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব এবং দূরদর্শিতার কারণে এটি সম্ভব হয়েছিল। তিনি প্রথম থেকেই এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত