যেমন গেল লকডাউনের দ্বিতীয় দিন

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ০২:১২

সাহস ডেস্ক

কিছু বেসরকারি যানবাহন ও রিকশা চলাচলের মধ্য  দিয়ে বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় দিন দেশব্যাপী আট দিনের লকডাউন চলছে। কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে সরকারের দেয়া কঠোর লকডাউনের কারণে দোকান ও শপিংমলগুলো বন্ধ রয়েছে।

দিলু রোড, মহাখালী, বিজয় সরণি এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ রাস্তা সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় রিকশা চলাচল করছে এবং লোকজন রিকশা ব্যবহার করে গন্তব্যে যাচ্ছে। পুলিশ বাইরে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা টিকাদান, জরুরি কাজসহ নানা অজুহাত দেখায়।

মহাখালী এলাকার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা বৈধ কারণ ব্যতীত কাউকে যাওয়ার অনুমতি দেইনি। কেউ কোনো বৈধ কারণ দেখাতে ব্যর্থ হলে তাদের মামলা বা জরিমানা করা হচ্ছে। তবে আমরা মানবিক ভিত্তিতে কাউকে চাপ দেইনি।

এছাড়াও পুলিশ, র‍্যাব এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে যানবাহন এবং লোকজনের চলাচল পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেছে। পুলিশ প্রতিটি যানবাহন চেক করায় কুড়িল বিশ্বরোডে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

তবে কাঁচাবাজারগুলি সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করতে দেখা গেছে কারণ তারা খোলা জায়গায় তাদের ব্যবসা পরিচালনা করেনি। এছাড়াও কিছু লোক স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাচল করেছে।

কোভিড-১৯ এর বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমন রোধ করতে সরকার আট দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে। সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত অবধি লকডাউন  কার্যকর থাকবে।

নতুন লকডাউনের আওতায় সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি  অফিস এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে তবে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তাদের নিজ নিজ কার্যালয়ে থাকতে হবে।

তবে বিমান, সমুদ্র এবং নদী ও স্থলবন্দরগুলির কর্মচারীরা এই লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে। লকডাউন চলাকালীন রাস্তা, নদী, রেলপথ এবং বিমানসহ সকল গণপরিবহন স্থগিত থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা, পণ্য বহন, উৎপাদন পরিষেবা এই সীমাবদ্ধতার বাইরে থাকবে।

তবে পণ্য বহন, জরুরি পরিষেবা এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে এই সীমাবদ্ধতা কার্যকর হবে না। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও বজায় রাখার শর্তে শিল্প ও কলকারখানাগুলি খোলা থাকবে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, কৃষিজাত পণ্য (সার, বীজ, কীটনাশক, মেশিনারিস), ফসল, খাদ্যবাহী যানবাহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যকর্মী, বিদ্যুৎ ও জরুরী সেবা সরবরাহকারী সংস্থাগুলির অফিস, কর্মচারী এবং যানবাহনগুলি, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর কার্যক্রম, মিডিয়া (প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া), ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা, টেলিফোন এবং ডাক পরিষেবাগুলি এই বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে।

জনগণের চলাচল সীমাবদ্ধ থাকবে এবং জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত কাউকেই বাইরে যেতে দেয়া হবে না (ওষুধ, প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা, চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ এবং মৃতদেহের সমাধি / দাফন করা, কোভিড-১৯ এর টিকা নেয়া ইত্যাদি)।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুসরণ করে সকল শিল্প ও কারখানাগুলিকে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলিকে তাদের কর্মীদেরকে তাদের নিজস্ব যানবাহনে বহন করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

হোটেল এবং রেস্তোরাঁগুলি কেবল রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা এবং দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টেকওয়ে / অনলাইন পরিষেবাগুলি পরিচালনা করতে পারবে। হোটেল বা রেস্তোরাঁয় অবস্থান করে কাউকেই খাবার খেতে দেয়া হবে না।

এই সময়ের মধ্যে সকল শপিংমল এবং মার্কেট বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে কাঁচাবাজারসহ প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত খোলা জায়গায় বিক্রি ও কেনা যাবে। স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নিশ্চিত করবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং প্রাণহানির ঊর্ধ্বগতি উভয় ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসাবে সরকার ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য দেশব্যাপী লকডাউন দিয়েছিল। কিন্তু সরকার লকডাউনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখে ৭ এপ্রিল থেকে সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় গণপরিবহন পুনরায় চালু করার পাশাপাশি ৯ এপ্রিল থেকে পাঁচ দিনের জন্য দোকান ও শপিংমল পুনরায় চালু করার অনুমতি দেয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত