৫ বছরের শিশু ধরিয়ে দিল মায়ের হত্যাকারী বাবাকে

প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২১, ১৪:২০

মা রোজিনা আক্তার দুলালীকে (২৫) হত্যাকারী বাবা ইউনুস আলীকে (৩৮) ধরিয়ে দিলেন ৫ বছরের মেয়ে মারিয়া। চার মাস পূর্বে নীলফামারীর সংগলশী ইউনিয়নের শিমুলতলী গ্রামে এই হত্যাকান্ডটি ঘটেছিল।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে নীলফামারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান (বিপিএম, পিপিএম) বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেন।

তিনি জানিয়েছে, ওই নারীকে গলা টিপে হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলে রেখে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করেছিলো স্বামী ইউনুস। যা পুলিশ এবং আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ঘটনার সময় ঘরে থাকা পাঁচ বছর বয়সী শিশু মারিয়া।

হত্যার শিকার রোজিনা সৈয়দপুর উপজেলা শহরের ঢেলাপীড় উত্তরা আবাসন এলাকার দুলাল হোসেনের মেয়ে। ইউনুস দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে তাকে বিয়ে করেন ২০১৬ সালে। তারা সদরের সংগলশী ইউনিয়নের শিমুলতলী এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

হত্যাকান্ডে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ইউনুস আলী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাদিখোল এলাকার মৃত নাজির উদ্দিনের ছেলে। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর ইউনুসও আদালতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।

নীলফামারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ-উন-নবী জানান, ২০২০ সালের ১১ই ডিসেম্বর শিমুলতলীর ভাড়া বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘরে দশ মাস বয়সী আয়েশা সিদ্দিকা ও পাঁচ বছর বয়সী মারিয়া অবস্থান করছিলো। একই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ইউনুসের শ্যালক রাকিবুল ও তার স্ত্রী সিমরান। ঘটনার দিন শ্যালক ও তার স্ত্রী বাড়িতে না থাকায় পারিবারিক কলহের জের ধরে গলাটিপে হত্যা করে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখেন ইউনুস। এ সময় পাঁচ বছর বয়সী মারিয়াকে ভয় ভীতি দেখিয়ে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় হত্যাকারী। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হলেও ময়না তদন্ত রিপোর্টে হত্যাকান্ড রিপোর্ট আসায় রোজিনার বাবা গত ২৩ মার্চ নীলফামারী থানায় মামলা করেন। এক পর্যায়ে ঘটনার সময় ঘরে থাকা পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে মারিয়া পুলিশের কাছে সে দিনের ঘটনার খুলে বলে।

নীলফামারী থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, ইউনুসের প্রথম স্ত্রী রয়েছেন। রোজিনাকে দ্বিতীয় বিয়ে করায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো তাদের। ঘটনার দিন স্ত্রীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছিলো।

তিনি আরো বলেন, স্ত্রীকে হত্যা করে ঘরে শিশুদের রেখে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বাহিরে যায় সে। পথিমধ্যে শ্যালক ও তার স্ত্রীকে জানায় রোজিনা ঘুমিয়েছে পরে বাড়িতে ফিরে ডাকাডাকি শুরু করে এবং সিলিং ফ্যানে লাশ ঝুলছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘরে ঢুকে লাশ নামায় রোজিনার ভাই রাকিবুল। পরে সৈয়দপুর হাসপাতালে নেয় তাকে। সেখান থেকে সৈয়দপুর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে। তদন্তের এক পর্যায়ে ঘটনার সময় ঘরে থাকা পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে মারিয়া পুলিশের কাছে মাকে হত্যার চিত্র তুলে ধরেন ও আদালতে জবানবন্দি দেয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত