রিসোর্ট ভাঙচুর: মামুনুল হকসহ ৮৩ জনের নামে মামলা

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৩০

সাহস ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্ট ভাঙচুরের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। এছাড়া মামলায় আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

বুধবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার বলেন, মঙ্গলবার রাতে তিনটি মামলা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। আর সাংবাদিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।

এর আগে শনিবার (৩ এপ্রিল) সন্ধায় ওই রিসোর্ট থেকে মামুনুল হককে তার দ্বিতীয় স্ত্রীসহ রয়েল রিসোর্ট থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় তার সমর্থক ও নেতাকর্মীরা। 

হেফাজত নেতাকর্মীরা প্রথমে রিসোর্টে পৌঁছালে সেখানে গেট বন্ধ করে দেয় একদল লোক ও নিরাপত্তাকর্মীরা। এ সময়ে তারা মামুনুল হককে মুক্তি দিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে গেট না খুললে তারা ওই রিসোর্টের গেট ভেঙে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। পরে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করেন।

নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা মামুনুল হককে আটকে তাকে ও তার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ হুজুর ও তার স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ড নিয়েই তাকে রুম দিয়েছে। দিনের বেলায় হুজুর প্রকাশ্যেই গেছেন রাতের আঁধারে নয়, তাহলে হোটেল কর্তৃপক্ষ সন্দেহ হলে পুলিশকে কেন জানালো না? কেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এসে আমাদের হুজুরকে লাঞ্ছিত করলো?

এর আগে ওইদিন বিকেলে রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হককে স্থানীয় কয়েকজন অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করেন কয়েকজন ব্যক্তি। ওই লাইভ দেখে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর স্থানীয় লোকজন ও মাদরাসার শত শত ছাত্র ওই রিসোর্ট গিয়ে মামুনুল হককে নিয়ে আসেন। বের হয়ে এসে মামুনুল হক জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন।

মামুনুল হকের দাবি, সঙ্গে থাকা নারীর নাম আমিনা তৈয়্যব, তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে তাকে বিয়ে করেছেন তিনি। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, হেফাজত কর্মীরা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে সড়কে অবস্থান নেন এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ অবস্থান করছেন- এমন খবরে স্থানীয় লোকজন রিসোর্ট ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। পরে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে।

হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান জানান, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক দুটি বিবাহ করেছেন। তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে শনিবার সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এসেছিলেন। পরে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসী তাকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিত করেন। স্থানীয়দের সাথে ধস্তাধস্তিতে মামুনুল হকের পরনে থাকা জামাটিও ছিঁড়ে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত