ইজিবাইক ছিনতাই: অজ্ঞান পার্টির মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৮

এক নারী সহ দুই ব্যক্তি দিনাজপুরের চেহেলগাজী থেকে নীলফামারী আসার জন্য একটি ইজিবাইক ৪০০ টাকায় ভাড়া করে। ইজিবাইক চালক জাহিদ চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারী ওই যাত্রীদের নিয়ে রওনা দেয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে নীলফামারী সদরের বাবুরহাট এলাকায় ইজিবাইক চালককে ওই যাত্রীরা ফুচকা খাওয়ালে সে অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। এরপর তার ইজিবাইকটি নিয়ে যাত্রীবেশী অজ্ঞান পার্টিরা পালিয়ে যায়। সেই ইজিবাইক চালকের দায়ের করা মামলায় নীলফামারী থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে অজ্ঞান পার্টির ইজিবাইক ছিনতাইকারীর মূল হোতা, ক্রয়-বিক্রয়ের সহযোগী, ইজিবাইক মেরামতকারীসহ ৮ প্রতারক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (২১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় পুলিশ অফিসের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান (বিপিএম-পিপিএম) সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারকৃত অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের বিস্তারিত এসব তুলে ধরেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-নীলফামারী সদরের অজ্ঞান পার্টির দলনেতা মীর আলম ওরফে আলম (৪২), রেজিনুর ওরফে রেজু (৪৫), হামিদুল ইসলাম ওরফে কালু (৩২), জাফর (৩৫), নুর ইসলাম (২২) ও পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জের মোশারফ হোসেন (৩৫), আমির হোসেন (২৪), সাইফুল ইসলাম (২২)। পুলিশ ওই মহিলা যাত্রীর নাম ঠিকানা পেয়েছে। সে এখন আত্মগোপনে থাকায় তার অবস্থান চিহিৃত করে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ সুপার জানান, ইজিবাইক চালকের কথামতো একটি পরিকল্পনা করে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় নীলফামারী সদরের মীর আলম ওরফে আলমকে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় নীলফামারীর আরও চারজনকে। তাদের সকলের তথ্য মিলিয়ে অভিযান চালানো হয় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায়। সেখানে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। সব মিলিয়ে সেই ছিনতাইকৃত ইজিবাইকসহ অজ্ঞান পার্টি কর্তৃক আরো ছিনতাই করা ছয়টি অটোরিকশা ও অটোরিকশা খোলা বডিসহ যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। এদের বলা হয় অজ্ঞান পার্টি বা মলম পার্টি। যারা যানবাহনের যাত্রী ও ইজিবাইক চালককে অচেতন করে সর্বস্ব কেড়ে নিত ও ব্যাটারীচালিত ইজিবাইক ছিনতাই করত।

নীলফামারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএসএম মুক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে সদর থানার ওসি আব্দুর রউপ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহমুদ-উন নবীসহ একদল পুলিশ সদস্য গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই ঘটনা উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। আসামীদের মধ্যে হামিদুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। সকল আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।