কোম্পানীগঞ্জে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ১০

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২১, ০২:২১

সাহস ডেস্ক

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আলা উদ্দিন (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও ১০ জন। আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলা উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

আলা উদ্দিন উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চরকালী গ্রামের মমিনুল হকের ছেলে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আরএমও ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল আজিম।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- মো. রাজিব, মাঈন উদ্দিন, শাহ আলম, আলা উদ্দিন, হৃদয়, দেলোয়ার হোসেন, সোহেল, শাহাদাত হোসেন, আরাফাত হোসেন, বেলাল হোসেন সেলিম।

অপর আহতরা হচ্ছেন- সাহাব উদ্দিন, জনি, সেলিম, ওয়াহিদ কামাল, রিপন, রফিক চৌধুরী, ফিনন চৌধুরী, দিপু, সুমন, আরিয়ান শিপন, শরীফ উল্যাহ টিপু, মানিক, শরীফ, আল মাহাদি, রাজিব হোসেন রাজু, নবায়ণ হোসেন, আদনান শাহ, সালা উদ্দিন।

আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন- ওসি মীর জাহিদুল হক রনি, এসআই জাকির হোসেন, নিজাম, কনেস্টবল খোরশেদ, আলা উদ্দিন, আবুল কালাম।

গুলিবিদ্ধদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন হৃদয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে। বাকি আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের সময় পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ককটেলের বিষ্ফোরণ, গাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে লক্ষ্মীপুর থেকে র‌্যাব-১১ এর একটি দল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও দাঙ্গা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নোয়াখালী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, গুলিবিদ্ধ একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও আরও ১১জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে বসুরহাট রূপালী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের ওপর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় রূপালী চত্বরে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে থানার পশ্চিম পাশের সড়ক (মাকসুদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) দিয়ে সভায় হামলার চেষ্টা চালায় মির্জার সমর্থকরা। এ সময় উভয় পক্ষের সমর্থকরা মুখোমুখি হলে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে এ সংঘর্ষ পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৮টার দিকে মেয়র মির্জার সমর্থকরা বসুরহাট বাজারে একটি মিছিল বের করলে বাদলের সমর্থকদের সাথে পুনঃরায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষকারীরা বসুরহাট পৌরসভা প্রাঙ্গণে অবস্থান নিলে শুরু হয় গোলাগুলি।

বাদল অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবাদ সভার শেষ পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে থানার পশ্চিম পাশের রাস্তা থেকে হামলা করে কাদের মির্জার সমর্থকরা। এ ব্যাপারে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, কারা হামলা করেছে আমি জানি না। হামলার সঙ্গে আমি বা আমার কোনো লোক জড়িত নয়।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, পুলিশ, ডিবি ও র‌্যাব-১১ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আছেন। হামলায় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিসহ বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত