২৬ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২১, ১৫:৪২

সাহস ডেস্ক

নাগরিক সমাবেশে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীরা আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। নইলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বুধবার (৩ মার্চ) দুপুরে নাগরিক সমাবেশ থেকে প্রতিবাদকারীদের পক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি এ ঘোষণা দেন।

এদিকে প্রতিবাদকারীদের প্রতি মারমুখী না হওয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে নাগরিক সমাবেশে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে প্রেসক্লাবের সামনে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। তবে সে ব্যারিকেড ভেঙে সামনে অগ্রসর হন প্রতিবাদকারীরা। পরে মৎস্য ভবনের সামনে প্রতিবাদকারীদের ঠেকাতে আরও একটি ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। তবে সেই ব্যারিকেডও ভেঙে ফেলেন প্রতিবাদকারীরা।

পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর প্রধান নির্বাহী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, সাবেক অধ্যাপক, গবেষক, সমাজবিজ্ঞানী ও সমাজকর্মী রেহনুমা আহমেদ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য মো. দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, লেখক অরূপ রাহী প্রমুখ।

এদিকে, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুসহ সব হত্যার বিচার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত নাগরিক সমাবেশে সংহতি জানিয়েছেন গণফোরামের একাংশের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, প্রতিনিয়ত আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবেদন পড়ছি। অতি সম্প্রতি লেখক মুশতাক আহমেদের কাশিমপুর কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংবাদ পড়েছি। তার জামিন আবেদন ছয়বার নামঞ্জুর করা হয়। শেষবার যখন তাকে আদালতে আনা হয় তখন তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট অবনতি ঘটেছিল। কিন্তু তার পরও তাকে জামিন দেয়া হয়নি।

গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে মুক্ত চিন্তা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চরমভাবে খর্ব করা হয়েছে। মানবাধিকার ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এই আইনের নিবর্তনমূলক ধারাগুলো সংশোধনের জন্য বার বার অনুরোধ করা সত্বেও সরকার এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বরং এর অপব্যবহার বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এইভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। এই কালো আইনটির অপব্যবহারের চরম বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে লেখক মুশতাক আহমেদের কারা হেফাজতে মৃত্যু। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর সার্বিক অবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত অপরিহার্য। এ ঘটনা নাগরিকদের বিবেককে আহত করেছে ফলে আজ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে যাতে করে মুশতাকের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করা হয় ও তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত