কার্টুনিস্ট কিশোরকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ
প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৬:২৫
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। কিশোরের অনুপস্থিতিতেই এদিন আদালতে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এই তথ্য নিশ্চিত করেন কার্টুনিস্ট কিশোরের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এই আদেশ দেন।
কিশোরের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আসামিকে হাজির না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালতের কাছে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি চান।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, ২৩ ফেব্রুয়ারি এই মামলার আসামি লেখক মুশতাক আহমেদ ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সেই আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল। ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলার অপর আসামি লেখক মুশতাক আহমেদ কারাবন্দী অবস্থায় মারা যান। অপর আসামি আহমেদ কবির কিশোরকে আজ আদালতে হাজির করা হয়নি।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আদালতকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আহমেদ কবির কিশোরকে নির্যাতন করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। অথচ এখন আবার নতুন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। এটা আইনের পরিপন্থী। আসামিকে আদালতেও হাজির করা হয়নি। মামলার অপর আসামি মুশতাক আহমেদ কারাগারে মারা গেছেন। এই রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল করা হোক। এ সময় আদালত রাষ্ট্রপক্ষের কাছে জানতে চান, কেন আসামিকে আজ আদালতে হাজির করা হয়নি? তখন রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর কোনো জবাব আদালতের কাছে দেওয়া হয়নি। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আহমেদ কবির কিশোরকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে দেন।
কার্টুনিস্ট কিশোরের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করার পর আহমেদ কবির কিশোরকে র্যাব হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছিল, যা ২০১৩ সালের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন অপরাধ। সিএমএম আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে, আহমেদ কবির কিশোরকে যেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। আহমেদ কবির কিশোর আদালতের কাছে অভিযোগ জানাতে চান। ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩) রাতে মারা যান। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন।
গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তাঁরাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়।
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে গতবছর ৫ মে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং অনলাইনে লেখালেখিতে সক্রিয় ব্যবসায়ী মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। পরদিন ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এ সময় মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩) মারা যান। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন।