ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় ছাত্র ইউনিয়ন, দ্বন্দ্বে সিপিবির সংযুক্তি

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:১২

বিগত ৪০তম সম্মেলনের পর থেকেই বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। সম্মেলনে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন হয়েছে এমন অভিযোগে ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির বিরোধিতা করে। এই সকল দ্বন্দের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফলাফল এলো অবশেষে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের দায়ে ছাত্র ইউনিয়নের ৮ নেতার বহিস্কারের মাধ্যমে।

৪০তম সম্মেলনে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়ের নেতৃত্বাধীন অংশটি কাউন্সিল হল ত্যাগ করে। কাউন্সিল হল ত্যাগের কারণ হিসেবে শোনা যায় বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফয়েজ উল্লাহকে অপছন্দ কিংবা তার নেতৃত্ব না মানার বিষয়ে। এর প্রতিচ্ছবি দেখা যায় গত ১ জানুয়ারী ২০২১ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দিবসে ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচিতে। সেখানে কাউন্সিল হল ত্যাগকারী অংশটি সভাপতি ফয়েজ উল্লার বক্ত্যবের সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কর্মসূচি স্থল ত্যাগ করে (যা "বিপ্লবীদের কথা" নামক ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও বার্তায় দেখা যায়)। এছাড়াও বিভিন্ন সময় এই অংশটি বিশেষ করে ঢাকা মহানগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে কথা বলার জন্য আহ্বান করেনি। এছাড়াও কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে এই অংশটির উপস্থিত না হওয়া কিংবা পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমেও তারা বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির বিরোধীতা করে। সংগঠনের সভাপতি কিংবা অন্যান্য নেতাদের নিয়ে ফেসবুকে ট্রল কিংবা ব্যাঙ্গচিত্র প্রচার করে।

এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থির এক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিনিধি সভা করার মাধ্যমে এক পর্যায়ে ছাত্র ইউনিয়নের বিদ্রোহী গ্রুপ এই কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে সম্মেলনের ডাক দেয়। এক্ষেত্রে সেই প্রতিনিধি সভার সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলেন ছাত্র ইউনিয়ন বশেমুরবিপ্রবি সংসদের সভাপতি রথীন্দ্রনাথ বাপ্পী ও জাবি সংসদের সভাপতি মিখা পিরেগু। কিন্তু পরিশেষে সম্মেলন করতে পারেনি।

এখানে সম্মেলন করতে পারেনি কিংবা করেনি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে দেখতে হবে সিপিবির দিকে। গোপন সূত্রে জানা যায়, সিপিবির বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতারা দফায় দফায় ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে বৈঠক করেছে। সর্বশেষ খবর পর্যন্ত সিপিবি ছাত্র ইউনিয়নকে জরুরী সম্মেলন করার জন্য আহ্বান করেছে। এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সিপিবির যেই অংশটি ছাত্র ইউনিয়নের বিদ্রোহী গ্রুপকে সাহায্য কিংবা সমর্থন করছে তাদের কার্যক্রম বা প্রচেষ্টা আছে বলে জানা যায়।

দেখা যায় মূলত পার্টির এমন সীদ্ধান্তের পরবর্তিতেই বিদ্রোহী গ্রুপ সম্মেলনের ডাক দিয়েও পিছিয়ে যায়। এখান থেকে অনুমান করাই যায় তারা সিপিবির এমন সীদ্ধান্তেরই অপেক্ষায় ছিলো।

পরিশেষে এই সকল সংগঠন বিরোধী বিভিন্ন অপকর্মের কারনে গতকালের ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভায় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিস্কার ও বেশ কয়েকজনকে সতর্ক করা হয়েছে। এখন এর প্রতিক্রিয়ায় বিদ্রোহী গ্রুপটির অবস্থান ও সিপিবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্র ইউনিয়ন সম্মেলন হয় কিনা তাই দেখার বিষয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত