২১ আগস্ট আ.লীগ সমাবেশে গ্রেনেড ছুড়েছিলেন ইকবাল

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৪:৪০

সাহস ডেস্ক

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকবালকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। হরকাতুল জিহাদের সদস্য সেলিম এক সময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, হামলার সময় সে মঞ্চের উদ্দেশ্যে গ্রেনেড ছুড়ে। ছদ্মবেশ ধারণ করে ইকবাল দেশে-বিদেশে আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সে একাধিকবার পেশা পরিবর্তন করে। এমনকি বিদেশে থাকা অবস্থায়ও সে নাম পরিবর্তন করেছিল।

র‌্যাবের মহাপরিচালক আরও বলেন, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের নির্দেশে ইকবাল হোসেন গ্রেনেড হামলায় জড়িত হন। হামলার পর আত্মগোপনে গিয়ে কখনো নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক আবার কখনো রিকশার মেকানিক হিসেবে ছদ্মবেশে জীবনযাপন করতে থাকেন। একপর্যায়ে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ম্যানুয়াল পাসপোর্টের সুযোগ নিয়ে ভিন্ন পরিচয়ে বিদেশে চলে যান তিনি। গত বছরের শেষের দিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ইকবালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, জঙ্গি ইকবালের বাবার নাম আব্দুল মজিদ মোল্লা। তার বাড়ি ঝিনাইদহে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। স্কুল-কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় সে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিল।

ডিজি বলেন, ২১ আগস্ট ইতিমধ্যে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতে দীর্ঘ সাত বছরে সর্বমােট ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা হয়। যুগান্তকারী এই রায়ে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ঝিনাইদহের স্থানীয় এক জঙ্গি সদস্যের মাধ্যমে সে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে (হুজিবি) যোগ দেয়। ২০০৩ সালে মুফতি হান্নান ও অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সান্নিধ্যে চলে আসে। সে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে থাকে। সে ২০০8 সালে আগস্ট মাসে মুফতি হান্নানের নির্দেশে ঢাকায় চলে আসে এবং গোপন আস্তানায় অবস্থান করতে থাকে। সেখানে হুজিবি নেতা মুফতি হান্নানসহ অন্যান্য সমমানদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। সে মুফতি হান্নানের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে দলীয় গোপন বৈঠকে অংশগ্রহণ করতো।

তিনি আরও বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সম্পর্কে ইকবাল জানায়, মুফতি হান্নানের নির্দেশে সে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করে। মুফতি হান্নান হামলা পরিচালনার জন্য তাকে গ্রেনেড সরবরাহ করেছিল।

সে আরও উল্লেখ করে যে, হামলা চলাকালীন সময়ে সে মঞ্চকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়েছিল। ঘটনার পর সে ঝিনাইদহে গমন করে এবং সেখানে আত্মগােপনে থাকে।

গ্রেনেড হামলার মামলায় দণ্ডিত ৩৩ আসামি কারাগারে থাকলেও পলাতক ছিলেন ১৬ জন। ইকবাল গ্রেপ্তার হওয়ায় এখন পলাতক রইলেন ১৫ জন। এই গ্রেনেড হামলার মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত।

ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয় আরও ১১ জনের।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত