কাদের মির্জাকে মাদকাসক্ত-দুশ্চরিত্রবান বললেন ফেনীর আ.লীগ নেতারা

প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০২:৩৪

সাহস ডেস্ক

ফেনীর আওয়ামী লীগের নেতারা আলোচিত বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জাকে ‘বিএনপি-জামায়াতের পেইড এজেন্ট, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, মাদকাসক্ত, দুশ্চরিত্রবান, বেসামাল ও একজন খুনি’ আখ্যায়িত করে তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে পাবনা মানসিক হাসপাতাল অথবা মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ফেনী শহরের একটি রেস্টুরেন্টে ‘কাদের মির্জার মিথ্যাচারের’ বিরুদ্ধে ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন।

এ সময় ফেনী পৌরসভার মেয়র ফেনী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী এবং জেলা যুবলীগের সভাপতি দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতনও বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, কাদের মির্জা বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের পূর্বে আমেরিকায় গিয়ে বিএনপি নেতাদের মধ্যস্থতায় লন্ডনে পালিয়ে থাকা বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সাথে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে গোপন সমঝোতায় মিলিত হন। তিনি বিএনপি-জামায়াতের ভোট নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হতে নানা নীতি কথা শুনিয়েছেন। তিনি এসব অপপ্রচারের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মওদুদ আহমদের অনুপস্থিতিতে বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হওয়ার সমঝোতা করেছেন।

তারা অভিযোগ করে বলেন, আমেরিকার জ্যাকসনের একটি হোটেলে বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন তথাকথিত আওয়ামী লীগ নেতা দাবিদার মির্জা কাদের। তিনি বিএনপি-জামায়াতের সোল এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। যে কথাগুলো বিএনপির মীর্জা ফখরুল ইসলাম বলছেন, সে কথাগুলো মির্জা কাদের বকছেন। তিনি একে একে ফেনী, নোয়াখালী জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন।

তারা বলেন, মির্জা কাদের সোনাগাজীর ছোট ফেনী নদীর ওপর সাহেবের ঘাট ব্রিজের সংস্কার কাজে ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছেন, তিনি বসুরহাট পৌর এলাকায় তার ছেলেকে দিয়ে সিএনজি চালকদের জিম্মি করে চাঁদা আদায় করছেন। মির্জা কাদের নিজেকে সৎ বলে দাবি করলেও মূলত দুর্নীতি আর টেন্ডারবাজির মাধ্যমে তিনি আমেরিকায় একটি বাড়ি ক্রয় করেছেন এবং ঢাকা শহরে নামে বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

দলীয় হাইকমান্ড তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে রাজপথ অবরোধেরও ঘোষণা দেন তারা।

ফেনী-নোয়াখালীসহ সারা দেশের হাজার হাজার দলীয় নিবেদিত নেতা-কর্মীর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হলেও শুধুমাত্র দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই হয়ে তিনি পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, ফেনীর দাগনভূঞায় তার গাড়ি বহরে পঁচা ডিম নিক্ষেপ ও হামলার যে কাল্পনিক অভিযোগ করেছেন তার কোনো সঠিক তথ্য প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। অহেতুক ফেনীর শান্তি সম্প্রীতির অগ্রদূত সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী এবং দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। বসুরহাটের মেয়র নিয়ে ফেনীর কোন নেতা-কর্মীর মাথা ঘামানোর সময় নেই। মাদকাসক্ত ও পাগলের স্থান পাগলা গারদে।

তাই তারা তাকে শেষ বারের মত পাগলা গারদে ঢুকানোর দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আলিম মজুমদার, সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেললে আনা অভিযোগের বিষয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাদের অন্যায়-অবিচার, চাদাঁবাজি, একরাম হত্যাসহ নানা বিষয়ে কথা বলায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। তারা যে অভিযোগ করেছে তার একটিরও কোনো প্রমাণ বা ভিত্তি নেই। যদি তার প্রমাণ থাকে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্রমাণ করুক। আমি যদি তাদের অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে অপরাধী হই আল্লাহ আমার বিচার করবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ৪৭ বছর রাজনীতি করলেও সব সময় আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি। আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে বাক-স্বাধীনতার অধিকার দিয়েছে। তাই যতদিন বাচঁব অন্যায়ের প্রতিবাদ করব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত