সুন্দরবনে বাঘে খেয়েছে দু’জনকে, বেঁচে ফিরলেন একজন

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:০২

সাহস ডেস্ক
নিহত দুই মৎস্যজীবী, পশ্চিম কৈখালী গ্রামের কফিলউদ্দিনের ছেলে রতন (৪২) ও ওই গ্রামের মনো মিস্ত্রীর ছেলে মিজানুর রহমান (৪০)।

সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণের ঘটনার দুইদিন পার হলেও দুই মৎস্যজীবীর মরদেহ উদ্ধার হয়নি এখনো। তবে জীবিত থাকা অপর মৎস্যজীবী বাড়িতে ফিরেছেন। জীবিত বাড়িতে ফেরা ওই মৎস্যজীবী আবু মুসা (৪১) সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কৈখালী গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে।

রবিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে সীমান্তের মাওন্দি নদী পার হয়ে শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন এলাকা দিয়ে বাড়িতে ফেরেন ওই মৎস্যজীবী।

নিহত দুই মৎস্যজীবী হলেন, সাতক্ষীরার শ্যমানগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কৈখালী গ্রামের কফিলউদ্দিনের ছেলে রতন (৪২) ও একই গ্রামের মনোমিস্ত্রীর ছেলে মিজানুর রহমান (৪০)। জীবিত থাকা অপর মৎস্যজীবী একই গ্রামের সাত্তারের ছেলে আবু মুসা (৪১)।

কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, দুপুর ১২টার দিকে সীমান্তের মাওন্দি নদী দিয়ে মৎস্যজীবী আবু মুসাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন এলাকাবাসী। কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন এলাকার পাশ দিয়ে মাওন্দি দিয়ে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা লতিফ, আরিজুল, আরশ খানসহ ৪-৫ জন তাদের একটি নৌকায় এলাকায় নিয়ে আসেন।

শ্যামনগন উপজেলার নীলডুমুর ১৭ বিজিবির সিও ইয়াছিন চৌধুরী জানান, ঘটনাটি এমন দুর্গম এলাকায় ঘটেছে, সেখানে কাউকে খুঁজে বের করাও দুরূহ ব্যাপার। ভারতীয় বিএসএফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি, চাপ দিচ্ছি, অনুরোধ করছি; তারাও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখছেন বলে জানিয়েছেন। অবৈধভাবে ভারতীয় অংশ প্রবেশ করলেও দুজন নিহত হয়েছেন, ঘটনাটিকে মানবিকভাবেই আমরা দেখছি। জীবিত থাকা মৎস্যজীবীকেও ফেরত আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মরদেহ দুটির এখনো হদিস মেলেনি।

কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম বলেন, বিজিবির সিওর মাধ্যমে ভারতীয় বিএসএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করেছিলাম। তবে বাঘের আক্রমণে নিহত দুই মৎস্যজীবীর মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনা তিনদিন গড়িয়েছে, আর সম্ভবনা নেই এমনই মনে হচ্ছে। জীবিত থাকা আবু মুসা ভারতীয় যে বাসিন্দার কাছে ছিলেন তিনি নৌকায় করে আমাদের দেশের মধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মৎস্যজীবী আবু মুসা তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, রতন ও মিজানুরকে বাঘে ধরে মেরে ফেলেছে। আমি বেঁচে আছি।

কৈখালী এলাকার জিএম আবুল কালাম শুভ বলেন, আবু মুসার সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছিল। তিনি কৈখালীর বিপরীতে ভারতীয় এলাকায় পুল্লাদ নামে এক ভারতীয় ব্যক্তির কাছে ছিলেন। তিনজন একটি নৌকায় ছিলেন। নৌকা থেকে দুজন নামার পরই তাদের বাঘে আক্রমণ করে। নিরুপায় হয়ে তড়িঘড়ি করে নৌকা নিয়ে ওখান থেকে মুসা চলে আসেন বলে জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত