সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:২১

সাহস ডেস্ক
এমনভাবে সিনেমা তৈরি করতে হবে, যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখতে পারি: প্রধানমন্ত্রী

সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এমনভাবে সিনেমা তৈরি করতে হবে, যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখতে পারি। সিনেমা বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। এ শিল্প যাতে উন্নত হয়, দেশ ছাড়িয়ে বাহিরে যায় সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।

রবিবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে  গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর বাঙালির সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব নষ্ট হয়ে যায়। আমরা যে বাঙালি, আমাদের সাংস্কৃতিক চিন্তা চেতনাটাও নষ্ট হতে বসেছিল। পরবর্তীতে আমরা যখন আবারও ক্ষমতায় এসেছি, অনেকগুলো কাজ করেছি। এর মধ্যে চলচ্চিত্র নিববন্ধন আইন-২০১১ প্রণয়ন, জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা ২০১৭ প্রণয়ন এমনকি যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নীতিমালা ২০১৭-ও আমরা করে দিয়েছি।

সমাজ গঠনে চলচ্চিত্রের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি একজন রাজনীতিবিদ, যত বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে যত কথাই বলি না কেন, একটা নাটক, একটা সিনেমা, একটা গানের মধ্য দিয়ে বা একটা কবিতার মধ্যে দিয়ে কিন্তু অনেক কথা বলা যায়, মানুষের অন্তরে প্রবেশ করা যায়, মনের গহীনে প্রবেশ করা যায়। সেজন্য এর একটা আবেদন কিন্তু রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আমরা বৃদ্ধি করেছি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০২০ করে দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে এটা আমি নিজে করার উদ্যোগ নিয়েছি। কারণ আমি দেখেছি অনেক শিল্পীর অবস্থা দুর্দশা। এই ট্রাস্টে চলচ্চিত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার যাতে ব্যবস্থা হয়, সে সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। যাদেরকে আমরা দেখতে পারিনা, কিন্তু নেপথ্যে থেকে দিনরাত পরিশ্রম করে চলচ্চিত্র নির্মাণে ভূমিকা রাখছেন, তাদের জন্যই এই ট্রাস্ট।

শিশুদের জন্য শিক্ষণীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুদের জন্য সিনেমা তৈরি করা একান্তভাবে প্রয়োজন। এর মধ্য দিয়ে একটা শিশু জীবনকে দেখতে পারবে, বড় হতে পারবে। শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা এবং তার মধ্যে দিয়ে তাদের শিক্ষণীয় বিষয়গুলো প্রতিফলিত করা, এটাও কিন্তু করতে হবে। অনেক দায়িত্ব আপনাদের।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিল্প-সংস্কৃতি, সেগুলোও যেমন থাকবে, আবার বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার জন্য সেগুলোও থাকতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে সেগুলো যেন গ্রহণযোগ্যতা পায়। পাশাপাশি আমাদের যে মহান অর্জন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি, আমাদের সে বিজয়ের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আমাদের চেতনা, আমাদের নীতি-আদর্শ- সেগুলো প্রতিফলিত হওয়া একান্ত দরকার।

মুক্তিযুদ্ধের ওপর আরও সিনেমা নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমি আপনাদের সিনেমা নির্মাণের অনুরোধ করবো- জাতির পিতাকে ১৫ আগস্ট হত্যা করার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। কাজেই ইতিহাসটা যেনো সবাই জানে। আমাদের বিজয়ের ইতিহাসটা প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন মনে রাখতে পারে, সেই ধরনের চলচ্চিত্র আরও নির্মাণ হওয়া দরকার।

এ বছর ৪৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ পেয়েছেন ৩৩ জন শিল্পী-কলাকুশলী। ২৬টি ক্যাটাগরিতে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় অসামান্য এই সম্মাননা। আর আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ও অভিনেত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা সুচন্দা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত