ভারতীয় পোষা পাখির প্রবেশ রোধে খুলনাঞ্চলে সতর্কতা

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:১৪

সাহস ডেস্ক

ভারতে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ দেখা দেয়ায় সেখান থেকে দেশে পোষা কবুতর, ময়না, কোয়েল পাখি ও মুরগির প্রবেশ রোধে খুলনাঞ্চলের নৌ ও স্থলবন্দরগুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। চিঠি পাওয়ার পরপরই বেনাপোল, ভোমরা ও দর্শনা স্থলবন্দরে এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় রোগের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধ এবং জনগণের সুরক্ষায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় পোষা পাখি যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে নজর রাখতে বলা হয়েছে।

পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে সংক্রামক রোগ হলে সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন মন্ত্রণালয়ে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, দেশের পোল্ট্রি সম্পদকে রক্ষার্থে সর্বত্র গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে নৌ-পরিবহন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়গুলোতে পাঠানো চিঠিতে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাসহ অন্যান্য জেলায় প্রতিদিন বার্ড ফ্লু রোগের অনুসন্ধান, সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সরকারি ও বেসরকারি খামারে নিবিড় তত্ত্বাবধায়নের জন্য নির্দেশনা দেয়।

খামারে জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খামারিদের পরামর্শ দেয়াসহ টিকার মজুদ বাড়াতেও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. আমিনুল ইসলাম মোল্লা জানান, গত ১২ জানুয়ারি মহাপরিচালকের চিঠি পাওয়ার পর বিভাগের ১১ হাজার ৬৪৮টি মুরগির খামারকে নজরদারিতে আনা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পোল্ট্রি খামারে রোগের লক্ষণ পাওয়া গেলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের জানাতে বলা হয়েছে। লক্ষণ দেখে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।

বার্ড ফ্লু দেখা দেয়ায় ২০০৭ ও ২০০৮ সালে দক্ষিণাঞ্চলের খামারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

এদিকে, দেশে বার্ড ফ্লু রোগের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে চিঠিতে নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

কোনো মৃত বা সন্দেহজনক হাঁস-মুরগি বা পাখি পাওয়া গেলে নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুত নিকটবর্তী ল্যাব হতে পরীক্ষা করে ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে চিঠিতে।

জেলা ও উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল ও গবেষণাগারে পর্যাপ্ত নমুনা পরীক্ষার কিট ও পিপিই জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহ, খামারে জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কৃষক ও খামারিদের সতর্ককরণে ব্যাপক প্রচারণা চালানো, বার্ড ফ্লু প্রতিরোধকল্পে এর টিকার বর্তমান মজুদ যাচাই করে দ্রুততার সাথে টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

একই চিঠিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালুকরণ এবং এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সারা দেশ থেকে সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও তা মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিতকরণের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত