জোড়া লাগা জমজ শিশু দু'টিকে পাঠানো হল বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:০৭

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত সোমবার (১১ জানুয়ারী) ভোরে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিদিরপুর মহল্লার গৃহবধু আঙ্গুরী বেগমের (৩৪) বুকের নীচ থেকে তলপেট পর্যন্ত জোড়া লাগা জমজ শিশু দুটিকে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় অপারেশনের জন্য ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গত সোমবার (১১ জানুয়ারী) বিকেলে শিশুদের চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজের বাড়িতে আনার পর মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারী) সকালে তাদের দেখতে যান জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ। এসময় তিনি শিশুদের পিতা মো.রুবেলের (৪২) হাতে তাদের চিকিৎসা সহায়তা বাবদ নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ৫টি কম্বল প্রদান করেন। এ সময় সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সিভিল সার্জন বলেন, জেলা প্রশাসক বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রি.জেনারেল জুলফিকারের সাথে কথা বলে শিশু দুটিকে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এর পর মঙ্গলবার সকালে চাঁপাইনববাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সে সদর হাসপাতালে গিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে শিশুদের নিয়ে ঢাকা রওনা দেন তাদের পিতা। শিশুদের মা রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সিভিল সার্জন বলেন, শিশু দু'টির সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পৃথক ও ঠিক থাকলেও প্রশ্রাব পায়খানার রাস্তা একটি ও তা বন্ধ। ফলে তাদের প্রয়োজনে মুখে ফোটা ফোটা স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ধরনের শিশুদের চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় 'কন জয়েন্ট টুইন' বলা হয়। তাদের অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থভাবে পৃথক করা যাবে কিনা তা যথাযথ পরীক্ষা নীরিক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন। তবে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে ও জোড়া শিশুদের সফলভাবে পৃথক করা সম্ভব হয়েছে।

শিশুদের পিতা রুবেল বলেন, রাজশাহীর চিকিৎসকরা শিশু দু'টির একজনকে ছেলে ও একজনকে মেয়ে বলে প্রাথমিকভাবে তাদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন,চিকিৎসকরা শিশুদের জন্মের পরপরই তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তাদের খাবার ব্যাপারে কিছু বিধি নিষেধ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ঢাকা নেবার জন্য শিশুদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিলে গত সোমবার বিকেলে তাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজের বাড়িতে আনা হয়। রুবেল আরও বলেন,তার প্রতিবন্ধী (দুই পায়ের পাতা জন্মগতভাবে উল্টানো) স্ত্রী এর আগেও দুটি সূস্থ শিশু পুত্রের জন্ম দিয়েছেন। এবার সন্তান প্রসবপূর্ব আলট্রাসনো রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা তাদের পূর্বেই জানান জমজ ও ত্রুটিযুক্ত শিশুর কথা এবং তাদের রাজশাহী পাঠান। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার রাস্তায় থাকা  পেশায় ঠেলাগাড়ীতে হরেক পণ্য বিক্রিকারী হকার ও বিদিরপুর মহল্লার রইসউদ্দিনের ছেলে রুবেল বলেন,শিশু দুটি এখন পর্যন্ত ভাল আছে। তবে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত দরিদ্র পুরো পরিবার।

এদিকে, শিশু দুজনের জন্মের পর তাদের এক নজর দেখতে গত দু'দিনে রাজশাহীতে হাসপাতালে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাড়িতে শত শত মানুষ ভীড় করে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত