স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: দায় স্বীকার দিহানের

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:১৮

সাহস ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহান। দিহান ওই স্কুলছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলার একমাত্র আসামি।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন।

পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে দিহান ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। সে ঘটনা লুকাতে চেয়েছিল। এজন্যই ধর্ষণের পর মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়লে সে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেবে। আদালতে তুলে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে ‌বলে জানান তিনি।

এর আগে নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলে পুলিশ আদালতের কাছে ৭ দিনের রিমান্ড চাইবে। আটক বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এর আগে আজ সকালে একজনকে আসামী করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান। এ ঘটনায় আটক বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান বলেন, গতকাল রাতে তানভীর ইফতেফার দিহানকে (১৮) একমাত্র আসামি করে মেয়েটির বাবা ধর্ষণ ও হত্যার মামলা করেছেন। মেয়েটির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মা কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে যান। এর এক ঘণ্টা পরে তার বাবাও ব্যবসায়িক কাজে বাসা থেকে বের হয়ে যান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থী তার মাকে ফোন করে কোচিং থেকে পড়ালেখার পেপার্স আনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। এই মামলার একমাত্র আসামি ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া শিক্ষার্থী দুপুর আনুমানিক ১টা ১৮ মিনিটে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীর মাকে জানান, মেয়েটি তার বাসায় গিয়েছিলেন। হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।

অফিস থেকে বের হয়ে আনুমানিক দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা হাসপাতালে পৌঁছেন। হাসপাতালের কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, গতকাল আসামি তার কলাবাগান ডলফিন গলির বাসায় ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অচেতন হয়ে পড়লে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি নিজেই তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়— উল্লেখ করা হয় এজাহারে।

নিহতের চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, সে আজ দুপুর ১টার দিকে ধানমন্ডির বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে কলাবাগানের ডলফিন গলিতে যায়। সেখান থেকে তার এক বান্ধবী তাকে একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, চারজন যুবক আমার মেয়েকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত