রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ০২:৪২

সাহস ডেস্ক
হত্যার শিকার স্কুল ছাত্রী শাহনূরী। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কলাবাগানে বৃহস্পতিবার ইংরেজি মাধ্যমপড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ওই ঘটনায় নিহত ছাত্রীর চার বন্ধুকে আটক করেছে। ভুক্তভোগী (১৭) ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহতের চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, সে আজ দুপুর ১টার দিকে ধানমন্ডির বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে কলাবাগানের ডলফিন গলিতে যায়। সেখান থেকে তার এক বান্ধবী তাকে একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, চারজন যুবক আমার মেয়েকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ বলেছে, স্কুলছাত্রীর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আটক চারজনের মধ্যে এ লেভেল পরীক্ষা দেওয়া এক তরুণ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। নিহত ছাত্রীটি রাজধানীর নামকরা একটি ইংলিশ মাধ্যম স্কুলে পড়ত।

নিউমার্কেট অঞ্চলের পুলিশ বলেছে, গতকাল দুপুরে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলাবাগান থানায় ফোন করে জানায়, এক তরুণ এক কিশোরীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন। কিশোরীর শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে। তখন নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান ওই তরুণকে আটকে রাখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। এরই মধ্যে কলাবাগান থানার পুলিশ আনোয়ার খান হাসপাতালে গিয়ে ওই তরুণকে আটক করে। খবর পেয়ে তরুণটির তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদেরও আটক করে। পরে চারজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ পরে স্কুলছাত্রীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হাসান বলেন, আজ একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে, মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আমরা উদ্ধারকৃত মরদেহের আইন অনুযায়ী সুরতহাল করছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আজ দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে আমরা খবর পাই আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেলে এক কিশোরীর মরদেহ আছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তারা আমাদের জানালে আমরা দ্রুত রেসপন্স করি। আমরা সেখানে গিয়ে দেখতে পাই এক কিশোরীর মরদেহ আছে। তার সঙ্গে একজন ছিল।

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে কী জানতে পেরেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এখন তদন্তের পর্যায়ে আছে। ছেলের পরিবারের কেউ বাসায় ছিল না। সে একাই ছিল। আমরা বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছি, বিশেষ করে আর কেউ জড়িত আছে কিনা।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক যুবক জানিয়েছে, তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল… এ ঘটনায় সে একা জড়িত বলে জানিয়েছে। ঘটনা ঘটেছে কলাবাগানের ডলফিন গলিতে যুবকের বাসায়। আমরা সেখান থেকে আলামত জব্দ করেছি এবং সেগুলো প্রোফাইলিং করছি। আমরা সকল দিক খতিয়ে দেখছি। যাতে পূর্ণাঙ্গ তদন্তে প্রকৃত দোষীকে শনাক্ত করে তাকে কঠোর আইনের আওতায় আনতে পারি। ঘটনাস্থল থেকে আমরা রক্তাক্ত দাগযুক্ত আলামত জব্দ করেছি ... পুলিশ ভুক্তভোগীর শরীরে বাহ্যিক কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত