ভাস্কর্য ইস্যুতে বিতর্ক নিরসনে পাঁচ প্রস্তাব কওমি নেতাদের

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ২১:৩১

সাহস ডেস্ক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যু নিয়ে চলমান বিতর্কের শরিয়তসম্মত সমাধান চেয়েছেন কওমি ঘরানার আলেমরা। এ ক্ষেত্রে বিতর্ক নিরসনে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক নেতারা। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের পরিবর্তে আল্লাহর নাম খচিত ‘মুজিব মিনার’ নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন তাদের কেউ কেউ।

শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) দুপুরে কওমিভিত্তিক নেতারা রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় ভাস্কর্য নিয়ে দেশের চলমান অস্থিরতা ও জাতীয় সংকট নিয়ে করণীয় শীর্ষক এক বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে এসব প্রস্তাব করা হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভাস্কর্য ইস্যুতে ৫টি প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আলেমরা। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি পত্র দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতেরও পরিকল্পনা নিয়েছেন তারা।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান।

বৈঠক শেষে বেফাকের মহাসচিব মাহফুজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে অংশ নেওয়া সবার মতামতের ভিত্তিতে ৫টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সেগুলো স্মারকলিপি আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। একইসঙ্গে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নেবে।

মাহফুজুল হক আরও বলেন, মানব মূর্তি বা ভাস্কর্য যে কোনো উদ্দেশ্যে তৈরি করা ইসলামের দৃষ্টিতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ৯২ শতাংশ মুসলিমের দেশে মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার আলোকে কোরআন সুন্নাহ সমর্থিত উত্তম কোনো বিকল্প সন্ধান করাই উত্তম।

বিকল্প চিন্তা কী প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুল হক বলেন, আমাদের প্রস্তাব আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত মুজিব মিনার নির্মাণ করা হোক।

ভাস্কর্য ছাড়াও মহানবী সা. এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নাশের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ, দ্বীনি আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি ও হয়রানি বন্ধ, মাহফিলে লাউড স্পিকার বন্ধ করার প্রতিবাদ ও আলেমদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও দায়িত্বহীন আচরণ বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় সভায়।

ওই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদশ খেলাফত আন্দোলনের আমির আতাউল্লাহ হাফজ্জেী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) সভাপতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, আব্দুল হালীম বুখারী, রুহুল আমীন, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, নুরুল ইসলাম জিহাদি, আব্দুল হামিদ (মধুপুর পীর), আব্দুল কুদুস, মনসুরুল হক, সাজিদুর রহমান, মুসলেহ উদ্দীন রাজুসহ অনেকে।

প্রস্তাবগুলো হলো:

১. ভাস্কর্য যে উদ্দেশ্যে তৈরি হোক, তা ইসলামে নিষিদ্ধ। তাই ভাস্কর্য তৈরি না করে ৯২ ভাগ মানুষের বিশ্বাসের আলোকে কুরআন সুন্নাহ সমর্থিত বিকল্প পথ বের করতে হবে।

২. বিশ্বনবীর (সা.) অবমাননাকর আচরণের ওপর কঠোর নজরদারিসহ দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩. ইতোপূর্বে গ্রেপ্তার আলেমদের মুক্তি দিতে হবে।

৪. ওয়াজ মাহফিলে মাইক ও লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে।

৫. উসকানিমূলক ও অবমাননাকর মন্তব্য কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত