কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত হচ্ছেন ইরফান সেলিম

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২০, ১২:৩৬

সাহস ডেস্ক

কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত হচ্ছেন সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম। মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে এক বছরের সাজা হওয়ায় আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

সিটি করপোরেশন থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্থানীয় সরকার বিভাগে গেলে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে রিপোর্ট (দণ্ডিত হওয়ার বিষয়ে) পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এটা তো আইনে কাভার করে। তিনি (ইরফান সেলিম) বরখাস্ত হবেন। আইনে (স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন আইন) বলা হয়েছে, কেউ সাজা প্রাপ্ত হলে তিনি বরখাস্ত হবেন।

তবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানতে করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আকরামুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে সোমবার (২৬ অক্টোবর) অবৈধ অস্ত্র ও ওয়াকিটকি রাখার দু’টি অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ এরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে এক বছরের জেল দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

র‌্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ছয় মাস ও অবৈধ মাদক রাখার দায়ে ছয় মাস করে মোট এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে দুজনকে।

এদিকে ইরফান সেলিমের বাসায় অভিযান চালিয়ে আধুনিক রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিসহ ৩৮টি ওয়াকিটকি ও অত্যাধুনিক কন্ট্রোল রুম উদ্ধার করেছে র‌্যাব। কন্ট্রোল রুমে রয়েছে আধুনিক ভিপিএস (ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার), ৩৮টি ওয়াকিটকি, ড্রোনসহ বিভিন্ন ডিভাইস।

র‌্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাজী সেলিমের ছেলে পুরান ঢাকা তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য সম্পূর্ণ ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মধ্যে রেখেছেন। এজন্য তিনি অবৈধভাবে ভিপিএস ডিভাইস ব্যবহার করতেন। রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিভিআইপি) নিরাপত্তায় নিয়োজিত এলিট বাহিনীর কাছে যেসব সরঞ্জাম থাকে, সেরকম সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। এই ডিভাইস আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ট্র্যাক করতে পারেন না। সরকারি অনুমোদ ছাড়াই তিনি এই ভিপিএস নেটওয়ার্কিং সিস্টেম করেছিলেন।

এর আগে আজ সোমবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ এরফান সেলিম, তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ, এ বি সিদ্দিক দিপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। সে মামলায় এর আগে গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওয়াসিফ আহমদ এজাহারে অভিযোগ করেন, তিনি নীলক্ষেত থেকে বই কিনে মোটরসাইকেলে করে মোহাম্মদপুরের বাসায় ফিরছিলেন। সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন। ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে তার মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়। ওয়াসিফ আহমদ মোটরসাইকেল থামিয়ে গাড়িটির গ্লাসে নক করে নিজের পরিচয় দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জানতে চান। তখন এক ব্যক্তি বের হয়ে তাকে গালিগালাজ করে গাড়ি চালিয়ে কলাবাগানের দিকে আসেন। মোটরসাইকেল নিয়ে ওয়াসিফ আহমদও তাদের পেছনে পেছনে আসেন। কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে গাড়িটি থামলে ওয়াসিফ মোটরসাইকেল নিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান। তখন তিন-চার জন লোক গাড়ি থেকে নেমে বলতে থাকে, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বাইর করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বাইর করতেছি। তোকে আজ মেরেই ফেলবো। এই বলে তাকে কিলঘুষি দিতে থাকে। এরপর তারা পালিয়ে যায়।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত