এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তা করায় এসআই বরখাস্ত

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৩৫

সাহস ডেস্ক

সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঞাকে পালাতে সহায়তা করায় এক এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে সিলেট মহানগর পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আসরাফ উল্লাহ তাহের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঞাকে ফাড়ি থেকে পালাতে সহায়তা করা ও তথ্য গোপনের অপরাধে এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার বি এম আশরাফ উল্যাহ বলেন, আকবরের পলাতক থাকার বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে হাসানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতন করার সময় তৌহিদ মিয়া নামে এক পুলিশ সদস্যের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফাঁড়ি থেকে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের মরদেহ শনাক্ত করেন।

ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরের কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন বলে প্রচার চালান। কিন্তু গণপিটুনির স্থান হিসেবে যে কাস্টঘর এলাকার কথা বলেছিল পুলিশ- সেখানে সিটি করপোরেশনের স্থাপন করা সিসিটিভির ক্যামেরায় ওই সময় এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ১২ অক্টোবর বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঞাসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। ওই দিন থেকে আকবর পলাতক আছেন। এ নিয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

পরে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে আলোচিত এই মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেয়া হয়। গত মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাতেই এই মামলার নথি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে মহানগর পুলিশ। এরপর পিবিআই কর্মকর্তারা বুধবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে যান এবং ঘটনার আলামত সংগ্রহ করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন করে পিবিআই। পরে পুনরায় ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে ফের তার মরদেহটি নগরের আখালিয়ার নবাবি মসজিদ সংলগ্ন পঞ্চায়েতি গোরস্থানে দাফন করা হয়।

মারা যাওয়ার পর রায়হানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার দুই হাতের তিনটি আঙুলের নখও উপড়ানো ছিল। এ ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে হেফাজতে নির্যাতন করে রায়হানকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত