জামিন নিতে হাইকোর্টে নিক্সন চৌধুরী

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২০, ১৩:০০

সাহস ডেস্ক

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুমকি ও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আগাম জামিন নিতে হাইকোর্টে এসেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) তার আগাম জামিন আবেদনের বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারোয়ার কাজলের বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

গত রবিবার (১৮ অক্টোবর) নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়। আদালতে এদিন নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মনজুর আলম।

আইনজীবী এম মনজুর আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনের মামলায় নিক্সন চৌধুরীর আগাম জামিন চেয়ে করা আবেদনটি আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, গালিগালাজ ও হুমকির অভিযোগে গত ১৫ অক্টোবর নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করে ইসি। জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার নোয়াবুল ইসলাম চরভদ্রাসন থানায় এ মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সাংসদ নিক্সন চৌধুরী ৯ অক্টোবর সকালে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে ফোন করে নির্বাচনে অধিকসংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অধিকসংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কারণে তাঁর সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হলে মহাসড়ক অবরোধ করাসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান ও অশোভন মন্তব্য করেন। এ ছাড়া নির্বাচনের দিন আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ভাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এক ব্যক্তিকে আটক করেন। এ ঘটনায় সাংসদ ইউএনওর মুঠোফোনে তাকে ও সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে অত্যন্ত অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখান। তা ছাড়া সাংসদ নিক্সন চৌধুরী নির্বাচনী এলাকায় উপস্থিত হয়ে নির্বাচনী কার্যকলাপে অংশ নিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।

ওই দিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জেনেছি। কমিশনারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছি। করণীয় বিষয়ে আমরা নির্ধারণ করেছি। আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ-কালকের মধ্যেই তা যাবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন পরিচালনার সময় একজন সংসদ সদস্য যে আচরণ করেছেন, তা কাম্য নয়। তিনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন এবং আইনে যে বিধিবিধান আছে, তার ব্যাপারে সেই বিধান প্রযোজ্য হবে পরিপূর্ণভাবে। সংসদ সদস্য হিসেবে এ ব্যাপারে আলাদাভাবে কোনো কিছু হবে না।

এদিকে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক সংবাদ সন্মেলনে মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেছেন, আমি যদি নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে থাকি, তাহলে জেলা প্রশাসকও আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।

নিক্সন চৌধুরী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বক্তব্য এডিট করে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ কাজ করা হয়েছে। ডিসির নির্দেশেই এসব কল রেকর্ড প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রকাশিত কল রেকর্ডের ভয়েস তার না দাবি করে এমপি নিক্সন বলেন, জেলা প্রশাসক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ভঙ্গ করেছেন। এছাড়া যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে তার কথোপকথোনের অডিও রেকর্ড প্রকাশ করা হয়েছে তার সঙ্গে মধুর এবং ভাই-বোনের সম্পর্ক বলেও দাবি করেন নিক্সন চৌধুরী।

নির্বাচনের আগের দিন বেশ কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে নিক্সন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়। বিএনপির প্রার্থীকে জেতানোর জন্যই অতিরিক্ত ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দেয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত