রেলওয়ে প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

দুর্নীতির মামলা দায়ের হওয়ায় আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর প্রকল্প থেকে এর পরিচালক মো. রমজান আলীকে অপসারণ করতে বাংলাদেশ রেলওয়েকে নির্দেশনা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

গত ১৬ আগস্টে মো. রমজান আলী ও তার স্ত্রী দিলরুবা পারভিন এলোরার বিরুদ্ধে দুটি আলাদা মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি মো. রমজান আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত ২ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অপর মামলায় রমজানের স্ত্রী আগা দিলরুবা পারভীন ইলোরাকে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখেছেন। দুটি মামলাই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ দায়ের করা হয় বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কার্যালয় জানিয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. শামছুজ্জামান বলেন, আমরা তাকে সরিয়ে দেবো (পদ থেকে)। তার বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে ডিজি বলেন, সেটা দুদকের (মামলার রায়ের) ওপর নির্ভর করবে।

মো. রমজান আলীকে কয়েক মাস আগে আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর প্রকল্পের পরিচালক করা হয়। এর আগে তিনি খুলনা-মংলা রেল লিংক প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন। প্রকল্প পরিচালক হওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী (পশ্চিম) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

গত ১৬ আগস্ট দুদকের উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিকীর দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় রমজান আলীকে খুলনা-মংলা রেল লিংক প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার নথি অনুসারে, তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে দুই কোটি ৪৩ লাখ টাকা আয় করেছেন। তবে, কখন এবং কার কাছ থেকে তিনি ঘুষ নিয়েছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি।

২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়কালে দুই কোটি ৪৮ লাখ টাকা আয় করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। মামলার নথি অনুযায়ী, এই আয়ের মধ্যে প্রায় এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা অপ্রদর্শিত খাত থেকে এসেছে।

রেল সূত্রে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ের ডিজিকে একটি চিঠি দিয়ে আখাউড়া-লাকসাম প্রকল্পে নতুন পরিচালক নিয়োগের প্রস্তাব পাঠাতে বলেছে।