নিক্সনের পক্ষে-বিপক্ষে সমাবেশ, সদরপুরে ১৪৪ ধারা জারি

প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২০, ১২:২৩

সাহস ডেস্ক

একই স্থান ও সময়ে দুই দলের সমাবেশ ডাকায় ফরিদপুরের সদরপুরে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা সদরের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো প্রকার সভা সমাবেশ বা জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

শনিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এটি আগামীকাল রবিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে ও বিপক্ষে দুটি গ্রুপ শনিবার সকালে ১০টার দিকে পাশাপাশি স্থানে সমাবেশ ডাক দেয়ায় এ ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন।

সদরপুর ইউএনও পূরবী গোলদার বলেন, যে কোনো প্রকার অনভিপ্রেত পরিস্থিতি রোধে সদরপুর উপজেলা সদরের এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কাউকে এ সীমানার মধ্যে সভা সমাবেশ বা জমায়েত করতে দেয়া হবে না।

ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র সাংসদ নিক্সন চৌধুরী নির্বাচিত হন। ওই দুবার এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক সাংসদ ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। কাজী জাফরউল্লাহকে হারিয়ে নিক্সন চৌধুরী সাংসদ হলে এই তিন উপজেলায় আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে পড়ে।

গত ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাউছার হোসেন জাফরউল্লাহর প্রতি আনুগত্য ছেড়ে নিক্সন শিবিরে যোগ দেন নির্বাচনের ১৫ দিন আগে। ফলে নিক্সনের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে কাউসার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন এবং বিজয়ী হন। কিন্তু ওই নির্বাচন চলাকালে কাউসার সমর্থক কয়েকজন এজেন্ট ও কর্মী জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের বাধা দেন। এটাকে কেন্দ্র করে নিক্সন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন সুলতানাকে মুঠোফোনে আপত্তিকর কথা বলেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাত আটটার দিকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সাংসদ নিক্সন জেলা প্রশাসককে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।

এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা হয়। মামলা দায়েরের পর তিন উপজেলার আওতাধীন দুই ভাগে বিভক্ত আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে।

সাংসদ নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে চরম মিথ্যাচার ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সদরপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান এক সামাবেশের ডাক দেন। অন্যদিকে, নিক্সন চৌধুরীর গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সমাবেশের ডাক দেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সায়েদিদ গামাল লিপু।

সদরপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান বলেন, সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে চরম মিথ্যাচার ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদে সদরপুর স্টেডিয়ামে স্থানীয় জনসাধারণের উদ্যোগে শনিবার সকালে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সায়েদিদ গামাল লিপু জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক সদরপুর স্টেডিয়ামে শনিবার সকালে এক বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত