ভারতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় রূপপুর বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্প

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২০, ১৩:০২

সাহস ডেস্ক

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালনের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প সময় মতো বাস্তবায়ন হওয়া নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ ভারতীয় আর্থিক সংস্থা দরপত্র প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ‘অতিরিক্ত সময়’ নিচ্ছে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা যায়, সরকারি মালিকানাধীন এ বিদ্যুৎ সংস্থাটি ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) চুক্তির সহায়তায় দেশের প্রথম নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প আরএনপিপি থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের প্রকল্পগুলো হাতে নেয়।

২০২৩ সালের প্রথমার্ধে আরএনপিপির প্রথম ইউনিটের ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করতে ২০২২ সালের মধ্যে সঞ্চালন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এতে অর্থায়নের জন্য ২০১৭ সালে নয়াদিল্লির সাথে ১.০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করে ঢাকা।

পাঁচটি সঞ্চালন প্রকল্প হলো- ১৩ কিলোমিটার নদী পারাপারসহ ৪৬৪ কিলোমিটারের ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন, সাত কিলোমিটার নদী পারাপারসহ ২০৫ কিলোমিটারের ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন, ৪০০ কেভির পাঁচটি বে এক্সটেনশন, ২৩০ কেভির চারটি বে এক্সটেনশন এবং ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার গুণগত উন্নয়ন, জরুরি নিয়ন্ত্রণ ও এ সম্পর্কিত বিভিন্ন কাজ।

সরকারি সূত্র জানায়, ৪৬৪ কিলোমিটারের ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্পটি সহজে ও দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য চারটি প্যাকেজে বিভক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো- ১০২ কিলোমিটার রূপপুর-বগুড়া লাইন, ১৪৪ কিলোমিটার রূপপুর-গোপালগঞ্জ লাইন, ১৪৭ কিলোমিটার রূপপুর-ঢাকা লাইন এবং ৫১ কিলোমিটার আমিনবাজার-কালিয়াকৈর লাইন।

নদী পারাপারের ১৩ কিলোমিটার কাজটিও কয়েকটি প্যাকেজ নিয়ে গঠিত- ছয় কিলোমিটার পদ্মা নদী পারাপার লাইন এবং সাত কিলোমিটার যমুনা নদী পারাপার লাইন। একইভাবে ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বিভক্ত- ৬০ কিলোমিটার রূপপুর-বাঘাবাড়ী লাইন, ১৪৫ কিলোমিটার রূপপুর-ধামরাই লাইন এবং সাত কিলোমিটার যমুনা নদী পারাপার লাইন।

পিজিসিবির অফিসিয়াল সূত্র জানিয়েছে, তারা প্রকল্পের কিছু প্যাকেজের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে, তবে বাকিগুলো ভারতীয় আর্থিক সংস্থার ছাড়পত্র পেতে বিলম্বের কারণে স্থগিত রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিজিসিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ভারতের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে প্রকল্পের নদী পারাপার এবং বে এক্সটেনশনের দরপত্র কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

পিজিসিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের ওপরই সময় মতো আরএনপিপি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর বিষয়টি নির্ভর করবে। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের অবকাঠামো প্রস্তুত না হলে, রূপপুর কেন্দ্র সময় মতো সম্পন্ন হওয়ার পরেও এর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে, প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমি ভারতীয় আর্থিক সংস্থার তরফ থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত