হাসপাতাল ত্যাগ করলেন ওয়াহিদা খানম

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২০, ১৪:৩৯

সাহস ডেস্ক

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওয়াহিদা খানমকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যখন তিনি আহত হয়ে এখানে ভর্তি হন তখন তার অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। আমরা যখন তাকে দেখেছি, তখন অপারেশন করার মতো অবস্থায় তিনি ছিলেন না। আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অপারেশন করার মতো একটা অবস্থায় নিয়ে আসি। তারপর আমরা তার অপারেশন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘অপারেশনের পর প্রথমে তার ব্রেন ঠিক মতো কাজ করছিলো না। প্রেসার ঠিক ছিল না। তবে দুই-তিন দিনের মধ্যে তিনি একটু সুস্থ হলেও ডানপাশ কোনোভাবেই কাজ করছিল না। শরীরের ডান পাশে তার পাওয়ার (শক্তি) শূন্য ছিল।’

তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ পর থেকে তিনি আস্তে আস্তে সুস্থ হতে শুরু করেন। শরীরের ডানপাশটা নাড়াতে শুরু করেন। এরপর বিগত প্রায় তিন সপ্তাহের চিকিৎসায় আল্লাহর রহমতে তিনি এখন ডানপাশ পুরোটাই নাড়াতে পারছেন এবং হাঁটতে পারছেন। একটু আগে তিনি হেঁটে অ্যাম্বুলেন্সে উঠে গেছেন। এখানে তার অপারেশনটা একশভাগ সাকসেসফুল হয়েছে বলে আমরা বলতে পারি।’

ডা. জাহেদ বলেন, ‘তার ডান হাত ডান পায়ের শক্তি ফিরে এসেছে। যদিও শতভাগ ফেরেনি। সেজন্য তাকে আমরা মিরপুরের সিআরপিতে রেফার্ড করেছি। ওখানে তাকে ফিজিওথেরাপি দেয়া হবে। আশা করি ফিজিওথেরাপিতে ইনশাল্লাহ তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, শুরুতে তার ব্রেইন ড্যামেজ ছিল। মাথার খুলির হাড্ডি ভেঙে ব্রেনের ভেতর ঢুকে গিয়েছিল। সেটা আমরা অপারেশন করে তুলে দিয়েছি। যে কারণে তার ব্রেনে ড্যামেজ হয়েছিল, যেটা আমরা বলি কনটিউশন। ব্রেনের ড্যামেজটা রিকভার হয়ে গেছে। তিনি এখন হাঁটতে পারছেন।’

ডা. জাহেদ আরও বলেন, ‘তার শারীরিক রিকভারির যা অবস্থা, তাতে আশা করা যায় ২-১ সপ্তাহের মধ্যে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তার ডিজ্যাবিলিটি থাকবে না ইনশাল্লাহ। আমরা তাকে এক মাস পর ফলোআপে আসতে বলেছি। শুরুতে স্ট্রেচারে শুয়ে হাসপাতালে তিনি এসেছিলেন, তার পালস, ব্লাড প্রেসার, জ্ঞানের মাত্রা স্বাভাবিক ছিল না। আল্লাহর রহমতে তিনি সুস্থ, সুস্থ হয়ে হেঁটে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। এটা আমাদের গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট এবং তার জন্য এটা একটা বিরাট সাফল্য বলতে পারি। যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন হয়েছিল, যেখান থেকে তিনি রিকভার করেছেন।’

গত ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ইউএনওর সরকারি বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে (৭০) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্ত।

আহত দুজনকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালে আনা হয়। আরও পরে তার বাবাকেও এখানে আনা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত