সীমান্ত হত্যা আমাদের জন্য যেমন লজ্জার, ভারতের জন্যও লজ্জার

প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:১৭

সাহস ডেস্ক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমাদের দু’দেশের মধ্যেই গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। তবে এই বন্ধুত্ব থাকার পরেও সীমান্ত হত্যা আমাদের জন্য যেমন লজ্জার, ভারতের জন্যও লজ্জার।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জেসিসি বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ড. মোমেন জানান, বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের দু’দেশের মধ্যেই গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। তবে বন্ধুত্ব থাকার পরও সীমান্ত হত্যা দুই দেশের জন্যই লজ্জার। আমরা চাই না সীমান্ত হত্যা ঘটুক।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যে দৃঢ় সম্পর্ক, সেটি একজন মারা গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন পেঁয়াজ একটি ছোট জিনিস। কিন্তু যখন দুর্ঘটনা হয় তখন এই সম্পর্কে আঘাত হানে।

সীমান্ত হত্যা নিয়ে তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যা বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে এটিকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার। আমাদের দুই দেশের দায়িত্ব আছে এবং সেটি আমরা করবো।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত থেকে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষ আনি। যেমন পেঁয়াজ এবং সেটি হঠাৎ করে বন্ধ করে দিলে এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারের ওপর প্রভাব পড়ে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ডিসেম্বরে ভার্চুয়াল বৈঠক হবে। তিনি বলেন, ‘দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকে কি হবে সেটি এখনও ঠিক করি নাই। আমরা সম্মত হয়েছি দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক হবে। এখন আমরা প্রস্ততি নেবো। আমাদের হাতে সময় আছে।

নদীর পানি বন্টন নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা দুই পক্ষ সম্মত হয়েছি। আমরা জোর দিয়েছি এটির বিষয়ে। বাকি আরও ছয়টি নদীর মীমাংসা নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তারা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে।

যৌথ নদী কমিশনের শেষ বৈঠক ২০১০ সালে হয়েছিল এবং এটি দ্রুত করার বিষয়ে দুই দেশ সম্মত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে বৈঠক হয়নি এবং আমার মনে হয় যথেষ্ঠ তথ্য-উপাত্ত ছিল না। কিন্তু আমরা সম্মত হয়েছি, এটি হবে। কিন্তু কবে হবে সেটি জানি না।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ও ভারতের রাষ্ট্রদূতের সমন্বয়ের গঠিত কমিটি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী জানান, আমাদের মতো তারাও উদগ্রীব। অনেক ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কারণ কিছু সমস্যা আছে। যে গ্যাপ তৈরি হয়েছে সেটি দূর করার জন্য কমিটি হয়েছে।

ভারতের দিকে আইন-কানুন নিয়ে কিছু ঝামেলা হয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, যেমন বলা হয়েছে বিভিন্ন এজেন্সির অনুমতি লাগে। তারপরে কাঁচামালের ক্ষেত্রে ভারত থেকে আমদানির জটিলতা রয়েছে। যে জিনিস বাংলাদেশে সহজলভ্য সেটি আমরা ভারত থেকে কেন আনবো। এ বিষয়ে আলোচনা হবে।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় জেসিসি বৈঠক শুরু হয়। এক ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। এবারের বৈঠকটি হয় ভার্চ্যুয়ালি। এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আর ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এবারের ৬ষ্ঠ জেসিসি বৈঠকে দু’দেশের সহযোগিতার সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা, ভারতের ক্রেডিট লাইন, প্রতিরক্ষা, কানেক্টিভিটি, নিরাপত্তা, সন্ত্রসাবাদ প্রতিরোধ, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি বিষয় বৈঠকে আলোচনা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত