ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি

প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৩১

সাহস ডেস্ক

সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উক্ত কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট এবং সাতদিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কমিটি গঠনের বিষয়টি জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজ (এম,সি কলেজ) ক্যাম্পাসে সম্প্রতি সংঘটিত ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোনোরূপ ঘাটতি ছিলো কিনা তা সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ও বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

যাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে:

১. পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা (আহবায়ক)

২. উপপরিচালক (কলেজ), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চল, সিলেট (সদস্য)

৩. সহকারী পরিচালক (কলেজ-১), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা (সদস্য-সচিব)

এদিকে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান গণধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় এজহারভুক্ত আসামি মাহবুবুর রহমান রনি এবং সন্দেহভাজন আসামি রাজন ও আইনুলকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি খোকন কুমার দত্ত বলেন, আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ড শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

একই মামলায় সোমবার তিন আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলামকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকালে ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে নিয়ে এমসি কলেজে ঘুরতে আসেন। ঘোরার এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তরুণীর স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য এমসি কলেজের গেইটের বাইরে বের হন। এসময় কয়েকজন যুবক তার স্ত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চান। এতে স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে স্ত্রী ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের হোস্টেলে নিয়ে যান। সেখানে স্বামীকে বেঁধে ছাত্রলীগের ৮/৯ জন নেতাকর্মী স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।

এসময় তাদের সাথে থাকা ৯০ টি মডেলের একটি প্রাইভেট কারও ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে প্রাইভেট কারটি তাদের জিম্মায় নেয় এবং স্ত্রীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) প্রেরণ করে।

এ ঘটনায় তরুণীর স্বামীর দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন- সাইফুর রহমান (২৮), সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।

মামলায় এজাহারভুক্ত পাঁচজনসহ এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত