এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ ও নিহতের পরিবারকে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা করে দেয়ার নির্দেশ

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৫১ | আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:৪৪

অনলাইন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার সজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ও নিহত ব্যক্তিদের ৩৭ পরিবারকে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা করে দিতে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাতদিনের মধ্যে এ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ৩৭টি পরিবারের কাছে এ টাকা হস্তান্তর করবেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।

গত সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) রিট আবেদনটি দায়ের করেন নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার। মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ রিটের ওপর শুনানি শেষে বুধবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়।

আবেদনে দগ্ধ ও নিহতদের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে আবেদনে ওই ঘটনায় কার কী দায়, কার অবহেলা বা কার ভুল তা নিরুপণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, নারায়ণগঞ্জের মেয়র, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও এসপিসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইমরান (৩০) নামে একজন। তার আগে রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়।  তারও আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই মসজিদের ইমাম আব্দুল মালেকসহ (৬০) আরও একজনের মৃত্যু হয়। এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাহারউদ্দিন (৫৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমরান নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মৃত অন্যরা হলেন- রিফাত (১৮), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮), সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপরী (৭২), হুমায়ুন কবির (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), জুয়েল (৭), জয়নাল আবেদিন (৪০), মাইনুদ্দিন (১২), রাসেল (৩৪), মো. নয়ন (২৭) ও কাঞ্চন হাওলাদার (৫৩)।

এ ঘটনায় শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম মৃত্যু হয় জুয়েল নামের এক শিশুর। এরপর রাতে, সকালে ও বিকেলে অন্যদের মৃত্যু হয়। মৃতের তালিকায় রয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিনও।

প্রসঙ্গত, এর আগে শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।  এরপর দগ্ধ ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইতোমধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি মুসল্লিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।