সিরাজগঞ্জে আলম চেয়ারম্যানের দূর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের তলব

প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:১৭

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হেদায়েতুল আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ একাত্তর ও যমুনা টেলিভিশনে দূর্নীতি, চাদাবাজি ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যাওয়ার সংবাদ প্রচারের পর, বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের (পাবনা সম্মেলিত শাখা) নজরে আসে। গত (২ সেপ্টেম্বর) চেয়ারম্যান আলমের বিরুদ্ধে  দুদক চিঠি ইস্যু করে পাঠিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনা শাখার সহকারী পরিচালক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান।

তিনি জানান উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হেদায়েতুল আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগে গত ২রা সেপ্টেম্বর একটি চিঠি ইস্যু করে পাঠানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য মোঃ হেদায়েতুল আলম যুবলীগের সাধারন সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই উথান শুরু হয়। মাত্র সাত বছরে যুবলীগনেতা থেকে ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তার হাটিকুমরুল ইউনিয়নে চড়িয়া শিকার গ্রামে প্রায় তিন বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন দৃষ্টিনন্দন আলীশান বাড়ি, লক্ষ টাকার গাড়ি, নামে বেনামে জমি দখল করে ছয় তলা মার্কেট নির্মাণসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নিজস্ব বাহিনী দিয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে।

এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জায়গা-জমি দখল ও মাদক ব্যবসা করে, চাকুরি দেওয়ার নামে প্রলোভন দেখিয়ে সাধারন মানুষের কাছে থেকে টাকা নেওয়া সহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের কারণে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হাটিকুমরুল গোল চত্তরের আশে-পাশের এলাকায় পরিচিতি হয়ে ওঠেন মাদক চেয়ারম্যান নামে। 

বর্তমানে আলম চেয়ারম্যান প্রায় ত্রিশ কোটি টাকার মালিক। অথচ প্রথম বার চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রায় নিঃস্ব ছিল। কোটি টাকা ও ক্ষমতার দাপটে দ্বিতীয় বার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হয়ে আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। সরকারের বরাদ্দকৃত বিভিন্ন প্রকল্প আত্মসাত করে সরকারি ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ তুলেছেন এলাকার জনসাধারণ। বিভিন্ন শালিশ, দরবার মনগড়া মত করে অর্থ আদায় করার জন্য গড়ে তোলেন তার নিজস্ব বাহিনী, এই বাহিনী দিয়েই  গড়ে তোলেন সিরাজগঞ্জ রোডের মৎস্য আড়ৎ, ঢাকা-চট্রগ্রাম সহ দুর পাল্লা গাড়িগুলোর কাউন্টার, সিরাজগঞ্জ রোডের অভিজাত হোটেল ফুড ভিলেজ, হানিফ হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের পাশে দোকান বরাদ্দ দিয়ে সাধারন মানুষের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় ও হাটিকুমরুল আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসের পাশে সরকারি জায়গায় ফলের দোকান গুলো থেকে প্রতি মাসে ৯০ নব্বই হাজার টাকা করে দোকানদারদের নিকট হতে চাঁদা নেয়, চাঁদা না দিলে তার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে ভয়-ভীতি দেখায়। ঐ বাহিনী দিয়েই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বালু মহল ইজারার নামে অসহায় মানুষের জমি কেটে কোটি কোটি টাকার বালু বিক্রি করেন।ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে দুর্নীতির পুকুর চুরিও বাদ যায় নি। এবাবে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ ও চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই ২০১৯ সালের মাঝামাঝি ০৫ (পাঁচ) কোটি টাকা মূল্যের জায়গা ক্রয় করেন। 

তার অপর্কমের বিরুদ্ধে যদি কেউ মুখ খোলেন তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা ভাবে হয়রানী করে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক ভুক্তভোগী জানান তাদের কাছে থেকে দোকান দেওয়ার নাম বলে ০৫ (পাঁচ) লক্ষ  করে টাকা নিয়েছে, এখন দোকানও দেয় না টাকাও দেয় না। আরো দুই ব্যক্তি বলেন মাছের আড়ৎ এ মাছের কাটা দিতে চেয়ে ০৩ (তিন লক্ষ) টাকা করে ছয় লক্ষ টাকা নিয়ে মাছের কাটাও দেয় না - উল্টা মার্ডার মামলা দেওয়ার ভয় দেখায়।

তার এই সব দুর্নীতি ও অনিয়ম অত্যাচারের সংক্ষিপ্ত বিবরণ স্থানীয় পত্রিকায় এবং গত ০৩/০৩/১৯ইং তারিখে যমুনা টেলিভিশনে এবং ০৪/০৩/১৯ ইং তারিখে ৭১ টেলিভিশনে হেদায়েতুল আলমের দুর্নীতির খবর প্রচারিত হয়।

এখন হাটিকুমরুল ইউনিয়ন বাসী প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সুষ্ঠ তদন্ত করে এই অত্যাচারী আলমের হাত থেকে রক্ষার করার দাবি জানান।