মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২০, ১২:২৭

সাহস ডেস্ক

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

রবিবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান।

মিজানুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জনের বক্তব্যে সিনহা হত্যাকাণ্ডে ওসি প্রদীপের সংশ্লিষ্টতার কথা উঠে এসেছে। তাই ওসি প্রদীপের জবানবন্দি নিয়ে তার দেয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।

কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের তদন্ত কমিটি এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৬৭ জনের জবানবন্দি নিয়েছে। সিংভাগ বক্তব্যে উঠে এসেছে ওসি প্রদীপ সিনহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তার জবানবন্দি নিয়ে; তার দেয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন অনেকটা গুছিয়ে আনা হয়েছে। তদন্ত শেষপর্যায়ে। শুধু ওসি প্রদীপের জবানবন্দির অপেক্ষায়। ওসি প্রদীপ রিমান্ডে থাকায় আমরা দুবার আদালতে আবেদন করেছি তার জবানবন্দি গ্রহণ করার জন্য। আদালত জানিয়েছেন রিমান্ড শেষ হলেই তদন্ত কমিটি জবানবন্দি নিতে পারবে।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির মেয়াদ আগামীকাল সোমবার (৩১ আগস্ট) শেষ হবে। ওই দিন আবার ওসি প্রদীপের রিমান্ড শেষ হবে। এজন্য তদন্ত কমিটি রোববার সারাদিন বৈঠক করেছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার। তাই আমরা আরও কয়েকদিন সময় বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। আশা করি; মন্ত্রণালয় আগামীকাল সময় বৃদ্ধি করবে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর ওসি প্রদীপের জবানবন্দি নিতে পারব আমরা।

গত ৩ জুলাই সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গে শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাহসিন রিফাত নুর কক্সবাজার আসেন ভ্রমণবিষয়ক ভিডিওচিত্র ধারণ করতে। ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত।

গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মো. রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে নয়জনকে আসামি করা হয়। পরে আরও ছয়জনকে আসামি করা হয়। দুইজন ছাড়া সব আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

গত শুক্রবার (২৮ আগস্ট) ওসি প্রদীপের জামিনের জন্য চট্টগ্রাম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী এহেছানুল হক হেনার নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি আইনজীবীর প্রতিনিধি দল কক্সবাজার আদালতে হাজির হয়ে রিমান্ডের বিরোধিতা করেন এবং জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন। রোববার মামলার প্রধান আসামি পরিদর্শক লিয়াকত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এখন পালা ওসি প্রদীপ ও নন্দদুলালের। তারা কবে স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য আদালতে আসছেন সেদিকেই নজর সবার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত