বির্তকিত সেই ওসির বিরুদ্ধে সাড়ে ৯ লাখ টাকার স্ট্যাম্প গায়েবের অভিযোগ

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২০, ২০:০২

অনলাইন ডেস্ক

স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করে ঘুষের টাকা গ্রহণের ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় স্ট্যান্ড রিলিজ হওয়া লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজ আলমের বিরুদ্ধে এবার মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে ভয় দেখিয়ে সাড়ে ৯ লাখ টাকার ‘ডকুমেন্টের স্ট্যাম্প’ গায়েব করার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) বিকালে স্ট্যাম্পটি উদ্ধারের জন্য লালমনিরহাট পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শাহানাজ বেগম নামে এক ভুক্তভোগী।

এর আগে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজ আলম নিজ অফিস কক্ষে বসে হাত স্যানিটাইজ করে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এ নিয়ে ‘হাত জীবাণুমুক্ত করে ঘুষ নেন ওসি মাহফুজ’ শিরোনামে একটি সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভিডিওসহ প্রকাশ হয়। এরপর থেকে ভুক্তভোগীরা ওসির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন। এমনই একজন ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে শাহানাজ বেগম বিচার চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী শাহানাজ বেগম লালমনিরহাট শহরের বিডিআরগেট খোচাবাড়ি এলাকার নবীয়ার হোসেনের স্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজাহান আলীর মেয়ে। তিনি লালমনিরহাট রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগের রানিং বেয়ারা পদের কর্মচারী।

অভিযোগে জানা গেছে, রেলওয়েতে চাকরির সুবাদে শাহানাজ বেগমের সাথে বাংলাদেশ রেলওয়ের বাহাদুরাবাদ ঘাটের লস্কার তৈয়াবুর রহমান টিপুর পরিচয় হয়। এরই সুবাদে তৈয়াবুর শাহানাজের ছেলেকে বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি নিয়ে দেয়ার কথা বলে কয়েক দফায় ৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা নেন এবং প্রমান স্বরূপ গত ২০১৫ সালের ১০ মে তারিখে নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি করেন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও চাকরি দিতে ব্যর্থ হলে টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তৈয়াবুর রহমান। সেই টাকা আজ কাল বলে কালবিলম্ব করায় স্ট্যাম্পমূলে মামলার প্রস্তুতি নেন শাহানাজ বেগম।

বিষয়টি বুঝতে পেরে ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে চাকরিদাতা তৈয়াবুর রহমান সদর থানা ওসি মাহফুজ আলম ও সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে শাহানাজের বাড়িতে আসেন। এ সময় আপোস মীমাংসার কথা বলে সাড়ে ৯ লাখ টাকা প্রমানের চুক্তিনামার স্ট্যাম্পটি খোদ ওসি মাহফুজ আলম হাতিয়ে নেন এবং তার স্বামী ও ছেলেকে থানায় নিয়ে আসেন। পরদিন শাহানাজের স্বামী ও ছেলেকে মামলায় জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে আপোস মীমাংসার কাগজে একটি এবং সাদা কাগজে একটি স্বাক্ষর নেন ওসি মাহফুজ আলম। এ বিষয়টি অন্য কাউকে জানালে পুনরায় স্বামী ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগি শাহানাজ বেগম।

শাহানাজ বেগম বলেন, তৈয়াবুরের মোটা অংকের টাকার জোরে ওসি মাহফুজ আমার বাড়িতে এসে স্ট্যাম্পগুলোসহ ছেলে ও স্বামীকে ধরে নিয়ে যান। টাকা ছাড়াই আপোসের কাগজে স্বাক্ষর করে ছেলে ও স্বামীকে ছাড়িয়ে আনি। তাদেরকে ছাড়তেও ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। দীর্ঘ দিন পরে হলেও বর্তমান এসপি ভালো মানুষ তাই তার কাছে বিচার চেয়েছি।

এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ওসি মাহফুজ আলমের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।