কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের বেধড়ক মারধরে নিহত হয় তিন কিশোর

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২০, ১৬:০০

সাহস ডেস্ক

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দিদের হতাহতের ঘটনা সংঘর্ষে নয়, কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের বেধড়ক মারধরে ঘটেছে বলে দাবী করেছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর বন্দিরা। বেধড়ক পিটুনিতে তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধায়কসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া আপাতত সংশোধনাগারটিরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরের এ ঘটনায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন বন্দি নিহত ও ১৪ জন আহত হয়।

পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও প্রাথমিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ঘটনার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বিষয়টি জানা গেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নিহতরা হলো, বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্ব পাড়ার নান্নু পরমানিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের আলহাজ নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৮) এবং খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮)।

হতাহতদের অভিভাবকদের দাবি, নিয়ম উপেক্ষা করে প্রায়ই নির্যাতন করা হয় কিশোরদের। এদিকে, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক বলছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুতই গঠন করা হবে তদন্ত কমিটি।

এদিকে, এ ঘটনায় আহত ১৪ জনের চিকিৎসা চলছে জেলা সদর হাসপাতালে। সেখানে উপস্থিত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হতাহতদের অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, সরকারি নিয়ম-কানুন অমান্য করে প্রায়ই যশোর কিশোর সংশোধনাগারের কর্মকর্তারা নির্যাতন করেন কিশোরদের। দেয়া হয় না ভালো খাদ্য ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও।

হাসপাতালে ভর্তি মাহিম নামের এক কিশোর অভিযোগ করে বলে, স্যারেরা ডেকে নিয়ে আমাদের বেদম পিটিয়েছেন। আমরা কোনো মারামারি করিনি।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন বলেন, আহত কিশোরদের কাছ থেকে আমরাও এমন তথ্য পেয়েছি। এদিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে কেন্দ্রের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

নিহত নাঈমের বড় ভাই শাহদাৎ হোসেন বলেন, কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে কোনো খবর দেওয়া হয়নি। আমরা রাতে টেলিভিশনে খবর দেখে সকালে এসেছি। গতকাল আমার ভাই নাঈম আমাদের সাথে মুঠোফোনে শেষ কথা বলেছে।

সমাজসেবা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বলন, জাতীয় শোক দিবসের সরকারি বন্ধের পরই গঠিত হবে তদন্ত কমিটি। যশোর সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহা বলেন, তাদের বিষয়ে আমি কৃর্তপক্ষকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি জেনেছে। ১৫ আগস্টের কর্মসূচির পর বিষয়টির ব্যবস্থা নেবে।

যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে; তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে। স্থানীয় প্রশাসন নিয়ে কমিটি করবে; সেজন্য আমরা কমিটি গঠন করি নাই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত