কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া কয়দির খোঁজ মেলেনি

প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২০, ১২:৪৪

সাহস ডেস্ক

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় লকআপের সময় বন্দিদের গণনাকালে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি আবু বকর সিদ্দিককে পাওয়া যায়নি। কারাগারের ভিতরে বিভিন্ন সেল ও ওয়ার্ডসহ আশেপাশের এলাকায় তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয় তাকে। এমনকি কারাগারের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পর্যবেক্ষণ করা হলেও কোথাও তার সন্ধান মেলেনি।

শনিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি আবু বকর সিদ্দিক। তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র সুপার জাহানারা বেগম।

তিনি বলেন, কারাগারের জেলার বাহারুল আলম এ মামলার বাদী হয়েছেন। পলাতক ওই কয়েদিকে আটক করতে পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তার হদিস পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় তদন্তের জন্য গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন এ তদন্ত কমিটির প্রধান। তিন সদস্যের এ কমিটির অন্যরা হলেন- ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুর রহমান ও মানিকগঞ্জ কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান। তদন্ত শেষে এ কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

ইতোমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। কমিটির সদস্যরা শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরে কাশিমপুরের এ কারাগারে আসেন। তারা দিনভর কারাগার এলাকা পরিদর্শন করেন এবং কারাগারের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময়ে তারা কারা কর্মকর্তা-কারা রক্ষী ও বন্দিসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন। 

কারাগারের সুপার জাহানারা বেগম জানান, এর আগেও কয়েদি আবুবকর সিদ্দিক কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায় কারাগারের সেল এলাকার একটি সেফটিক ট্যাংকির ভিতরে লুকিয়ে নিজেকে আত্মগোপন করেছিলেন। দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজি শেষে পরদিন কারগারের ৪০নং সেল এলাকার একটি সেফটিক ট্যাংকির ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। 

সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার আবাদ চন্ডীপুর এলাকার তেছের আলী গাইনের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক (৩৪) গত ২০১১ সালের ১৪ জুন হতে এ কারাগারে বন্দি ছিলেন। তাকে ২০০২ সালের ১৭ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। শ্যামনগর থানার একটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কাশিমপুরের এ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। ২০০২ সালের ১৭ মার্চ এর একটি হত্যা মামলায় আদালত আবু বকরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট। পরবর্তীতে আসামির আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০১২ সালের ২৭ জুলাই ওই সাজা সংশোধন করে তাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত