‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা বজায় রাখুন’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদেরকে কিছুটা পিছিয়ে দিলেও, আমাদের জনগণ যাতে খাদ্য সংকটে না ভোগে তা নিশ্চিত করতে মহামারির মধ্যেও কৃষিতে অর্জিত উৎপাদন বৃদ্ধির যে ধারা তৈরি হয়েছে তা বজায় রাখতে হবে।’

মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সকালে নিজ সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)-এর নির্বাহী কমিটির সাপ্তাহিক বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) অর্জনের প্রয়াস চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি করোনা মহামারির মধ্যেও কৃষিতে অর্জিত উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

একনেকের চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা গত ১১ বছরে কৃষিখাতের উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সারের দাম কমানো, ভালো মানের বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপরকণ সরবরাহসহ কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে আসছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২ কোটি কৃষককে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করার জন্যে কার্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, ১ কোটি কৃষক ১০ টাকা করে জমা দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলেছেন।’

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর একাধিকবার সারের মূল্য কমিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি শাসনামলে প্রতি কিলোগ্রাম ডিএপি সারের মূল্য ছিল ৯০ টাকা। কিন্তু এখন কৃষকেরা সেই সার পাচ্ছেন ১২ টাকায়।’

করোনা সংকটকালীন যারা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন, বিশেষ করে ধান কাটার ব্যাপারে আমাদের সংগঠনের প্রতিটি সহযোগী সংগঠন, আমাদের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী লীগ প্রতিটি নেতা-কর্মী তারাও কিন্তু মাঠে নেমে গেছে। নিজের হাতে ধান কেটে কৃষকের ঘরে তুলে দিয়েছে। এই কাজ করতে যেয়ে আমাদের অনেকে কিন্তু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অনেকে মৃত্যুবরণও করেছে। যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। আমরা যদি সবার ঘরে খাবার নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে অন্যান্য সমস্যার সমাধানও করা যাবে।’

দেশের অর্থনীতিতে করোনার আঘাত সত্ত্বেও এসডিজি অর্জনে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের এসডিজি অর্জনের লক্ষ্য রয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমরা এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে বেশ কয়েকটি অন্তর্ভূক্ত করেছি এবং তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। ইনশাল্লাহ আমরা এসডিজি অর্জনে সক্ষম হবো।’

এ সময় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। একনেকের অন্য সদস্যরা রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি কনফারেন্স রুম থেকে বৈঠকে সংযুক্ত হন।