কুড়িগ্রামে বাড়ছে বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২০, ১২:৫৭

সাহস ডেস্ক

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ অঞ্চলের বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারীতে ৫৭ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। ফলে টানা এক মাস ধরে দুর্ভোগে রয়েছেন এখানকার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ।

সোমবার (২৭ জুলাই) সকালে ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। 

এছাড়া তিস্তা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড ভাঙন। একদিকে ভাঙন আর অন্যদিকে পানিবন্দী অবস্থায় চরম বিপর্যয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন অসহায় মানুষরা।

বন্যার পানিতে ডুবে জেলায় ১৭ শিশুসহ এ পর্যন্ত মারা গেছে ২২ জন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের গত ২০ জুন থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে ৬টি কন্যা শিশু ও ৯টি ছেলে শিশু রয়েছে।

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান দাবি করেন, শুধুমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ মৃত্যুর মিছিল থামানো সম্ভব।

তিনি বলেন, এ জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সকল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মী চিকিৎসা সেবা দেয়ার পাশাপাশি শিশুদের সতর্ক রাখতে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

তবে শুধু স্বাস্থ্য বিভাগ প্রচার চালালে চলবে না। জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে সচেতনতার কাজটি করতে হবে। তা হলে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে, যোগ করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম শিশু ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহানা আক্তার বলেন, বন্যার মধ্যে অবহেলা ও খেয়ালিপনার কারণে হয়তো এমনটি ঘটছে। তবে, সচেতনতা বৃদ্ধির পরেও চ্যালেঞ্জ হলো দুরন্তপনা শিশুদের আগলে রাখা। আমরা আমাদের সকল কাজের সাথে শিশু সুরক্ষার সচেতনতার প্রচার অব্যাহত রেখেছি।

বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) আফাদের নির্বাহী পরিচালক সাইদা ইয়াসমিন জানান, বন্যা কবলিত শিশুদের সুরক্ষায় দৃশ্যমান কোনো কাজ নেই। সবার দৃষ্টি ভয়াবহ বন্যার দিকে। শিশু মানবসম্পদ রক্ষায় জিও কিংবা এনজিও কারোরই সুনির্দিষ্ট করে প্রকল্প, বাজেট কিংবা পরিকল্পনা নেই। সবার দৃষ্টি রিলিফ, ভাঙন প্রতিরোধ, উদ্ধার ও পরিবারের অন্যান্য সম্পদ রক্ষায়।

পরিবারের সকল সদস্য সজাগ থাকলে ও বাড়ির শিশুদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করলে এ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। শিশুদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বছরব্যাপী বিভিন্ন কাজ করতে হবে, যোগ করেন তিনি।

সলিডারিটি এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম হারুরন অর রশিদ লাল উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রিয় শিশুদের বাঁচাতে হবে। বন্যা আসার আগেই শিশুদের রক্ষায় নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করতে হবে। পরিবার ও প্রতিবেশীদের সবাইকে কাউন্সিলিং করতে হবে। নিতে হবে বন্যা কবলিত শিশুদের সুরক্ষায় নিরাপদ ব্যবস্থাপনা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত