প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতিতে প্রধানমন্ত্রীর অসন্তুষ্টি

প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২০, ০৩:৪৪

সাহস ডেস্ক

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় আজকে মোট ৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি ও সমন্বয়হীতার কারণে বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) প্রকল্পগুলো সময়মত বাস্তবায়নের জন্য তাদের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করতে বলেছেন।

একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তুলে ধরেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের (উন্নয়ন) কাজের ধীরগতি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং কাজগুলোকে ত্বরান্বিত করতে বলেছেন। প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের অভাব (প্রকল্প বাস্তবায়নে) তার (প্রধানমন্ত্রী) নজরে এসেছে… তিনি বারবার বিভিন্ন বিভাগকে এটি (সমন্বয়) জোরদার করতে বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর বিরক্তির বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, খুলনা শিপইয়ার্ডের ভেতরে রাস্তাঘাট অনেক সরু ও ভাঙাচোরা। এগুলোকে প্রশস্ত করা ও সুন্দর করার জন্য প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য এটার গতি অত্যন্ত মন্থর। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। প্রকল্প কাজে দেরির একটি চমৎকার উদাহরণ এই প্রকল্পটি।

তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, এগুলো কেন হচ্ছে? বলা হয়েছিল যে, ওখানে সমন্বয়ের ব্যাপার ছিল। সড়ক নির্মাণে সমন্বয়ের দরকার ছিল সড়ক ও জনপদের সঙ্গে, সেটা করতে পারেনি। এছাড়া এটা নির্মাণের যে দায়িত্ব ছিল খুলনার অন্যান্য কর্তৃপক্ষের, তাদের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তারা এত বড় কাজ করতে পারে কি-না, বা তাদের সক্ষমতা আছে কি-না, অভিজ্ঞতা আছে কি-না। এই সবমিলিয়ে আজকে তো একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী খুবই বিরক্ত প্রকাশ করেছেন। শেষ পর্যন্ত এটার সময় দুই বছর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, লাঙ্গলবন্দ থেকে মিনারবাড়ী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পেও সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা গেছে। অহেতুক জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এটা একটা সহজ ব্যাপার ছিল, সড়কটাকে বড় করা। কারণ হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা স্নানে আসেন। তারা যাতে আরামে চলাফেরা করতে পারেন। স্নানের সময় নদীতে নামে হাজার হাজার লোক, সেজন্য ঘাট তৈরি করে দেয়া। বড় সিঁড়ির ঘাট। এই ছোট ছোট কাজ করতে গিয়ে কোনো কোনো লোকে বা সংস্থা এটা করবো, ওইটা করবো, বাংলো বানাবো, হোটেল বানাবো – এসব। এটা করে গোটা প্রকল্প হুমকির মুখে পড়ে গেছে, দেরিতে পড়ে গেছে।

তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, যার কাজ তাকে করতে হবে, এই কাজ যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্যের মধ্যে যদি থাকেন, এখানে ঘাট বানিয়ে দেন, সড়ক প্রশস্ত করে দেন। কিছু একটা করে দেন, যেটা খুব জরুরি। নারী-পুরুষ অনেকেই যায়। সুতরাং এখানে শৌচাগার খুবই দরকার। আর চা, কফির দোকান, হোটেল এগুলো ব্যবসায়ীরাই করবে নিজেদের প্রয়োজনে। আমরা শুধু উন্নয়নটা করে দিই। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, এইসব জটিলতা যেন না হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাজটা করার কথা, শেষ করে দেবে। আর অন্যান্য যেসব আইডিয়া এসেছে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, এগুলো দূরে সরিয়ে রাখেন, মূল কাজটা করেন।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অর্থবছরের তৃতীয় সভায় প্রায় ১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এম এ মান্নান বলেন, আমরা চারটি মন্ত্রণালয়ের ৬টি প্রকল্প বৈঠকে উত্থাপন করি এবং সবগুলো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোর আনুমানিক মোট ব্যয় ১ হাজার ১৩৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ১ হাজার ২৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং বিদেশি ঋণ ও অনুদান ১০৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এর মধ্যে চারটি নতুন প্রকল্প এবং বাকি দুটি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত