প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের ‘ডেল্টা কাউন্সিল’ গঠন

প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২০, ১৭:৪৩

অনলাইন ডেস্ক

প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের ‘ডেল্টা কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে। গত ১ জুলাই এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরিকল্পনামন্ত্রীকে কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান করা হয়েছে।

২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বন্যা, নদী ভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার দীর্ঘমেয়াদী কৌশল হিসেবে আলোচিত ‘বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)।

এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে নেদারল্যান্ডস অনুদান হিসেবে দেবে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও অন্যান্য সংস্থার মানবসম্পদের দক্ষতার উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা, ডেল্টা বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান ও প্রয়োজনের নিরিখে নতুন জ্ঞান ও কৌশল অবলম্বনে এ পরিকল্পনাটি পর্যালোচনা ও হালনাগাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

‘ডেল্টা প্ল্যান’ নামে পরিচিত শত বছরের এ মহাপরিকল্পনার অধীনে আপাতত ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ৮০টি প্রকল্প নেবে সরকার।

ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- কৃষিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী। এছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, নৌ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্যকে এই কাউন্সিলের সদস্য সচিব করা হয়েছে।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার আকাক্সক্ষা পোষণ করছে। ভৌগোলিক অবস্থান হিসেবে বাংলাদেশ তিনটি বৃহৎ নদী গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার অববাহিকায় অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তর বদ্বীপগুলোর অন্যতম। বদ্বীপের গঠন, নদীর গতিপথ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা, বন্যা, নদীভাঙন, খরা, ভূমিকম্প এবং ঘূর্ণিঝড় এ দেশের নিয়মিত চিত্র। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তনকে বিবেচনায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে সুসংহত ও টেকসই করার লক্ষ্যে বদ্বীপ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য নিরাপত্তা, সমন্বিত পানি ও নদী ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু অভিযোজন বিষয়ে একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার জন্য নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় শত বছরের এ বদ্বীপ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এ মেগা পরিকল্পনার সামগ্রিক তদারকি, বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ এবং হালনাগাদের দায়িত্ব পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এসব দায়িত্ব সুচারূভাবে পালনের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।