হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপে মাতৃত্বকালীন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২০, ১৩:৫১

তাজুল ইসলাম তছলিম

প্রতিজনকে ৯মাসের মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া হয় ৭ হাজার দুইশত টাকা। টাকা নেওয়ার পর আবার প্রতিজন থেকে ৩ হাজার টাকা করে চেয়ারম্যানের নির্দেশে চৌকিদার নিয়ে নেন। এভাবে একটি ইউনিয়নের ৬৯ জন সুবিধা ভুগি সবার কাছ থেকে উত্তোলন করা টাকার অংশ কেটে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ১১নং নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, ৩০ মে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরনের নির্ধারিত দিন। সে মোতাবেক সকালে ব্যাংকের লোকজন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নিঝুমদ্বীপ বন্দরটিলা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করেন। প্রথম থেকে স্থানীয় চৌকিদর মুনাপ চেয়ারম্যানের কথা বলে প্রতিজন সুবিধাভুগী থেকে ৩হাজার টাকা করে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশের রুমে নিয়ে রেখে দেন। এতে কেউ ভয়ে প্রতিবাদ না করলেও ৭নং ওয়ার্ডের চা দোকানদার মো: সালা উদ্দিন (৫৫) তার পুত্রবধু রুপা আক্তারের অবশিষ্ট ৪ হাজার টাকা চেয়ারম্যানকে ফেরত দিয়ে আসেন। 


একই অভিযোগ নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহিমের স্ত্রী মরজিনা বেগম (২২),  আজমির হোসেনের স্ত্রী ইয়াছমিন বেগম (২৬), ১নং ওয়ার্ডের বাতায়ন কিল্লা গুচ্ছ গ্রামের মনির উদ্দিনের স্ত্রী সুমা(২২), একই ওয়ার্ডের মো: এরশাদের স্ত্রী রুবিনা আক্তার সুমি (২০) ও ২নং ওয়ার্ডের আব্দুল কাদেরের স্ত্রী ফেরদৌস বেগমের (৩৫)।


এদিকে মহিলাদের এসব অভিযোগ সঠিক বলে জানান ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খবির উদ্দিন, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কেপায়েত উল্যাহ, ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন ও ৪,৫,৯নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য তাহেরা বেগম। তারা বলেন মাতৃত্বকালীন ভাতা কেটে রাখার বিষয়ে সংবাদ পেয়ে চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করলে তিনি সঠিক উত্তর দিতে পারেনি।


তবে চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ মিথ্যা। কিছু মহিলার ক্ষেত্রে শশুরবাড়ী ও বাবার বাড়ীর লোকজনের মধ্যে এ টাকা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় তাদের টাকা ভাগ করে দিয়েছি মাত্র।


এদিকে জাহাজমারা সোনালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শ্রীবাস চন্দ্র দাস জানান, নিঝুম দ্বীপে টাকা বিতরণ করে আসার সময় ঘাটে কয়েকজন আমাদেরকে মহিলাদের টাকার একটি অংশ কেটে রাখার বিষয়টি বলেছে। আমরা সিদ্বান্ত নিয়েছি  এখন থেকে আর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে এ টাকা বিতরন করবো না।

হাতিয়া মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চন্দন চক্র বর্তী জানান, হাতিয়াতে বর্তমান অর্থ বছরে ১১টি ইউনিয়নে ৮শত ৪০জনকে প্রতি মাসে ৮শত টাকা করে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এরা দুই বছর এ ভাতা পাবেন। সাবইকে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে এ ভাতা প্রদান করা হয়। 


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে প্রত্যেকের নিজ নিজ নামে একাউন্ট করা আছে। এসব টাকা একাউন্টে এসে জমা হয়। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের কোন তদারকি করার সূযোহ রাখা হয়নি। তবে কেউ যদি কারো টাকা নিয়ে নেয় সে ব্যাক্তিগত ভাবে অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত