নজরুলের জীবনাদর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২০, ২১:২১

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিদ্রোহী কবির জীবনাদর্শ অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শান্তিপূর্ণ, সুখী-সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে।’

আগামীকাল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ২৪ মে (রবিবার) সন্ধ্যায় এক বাণীতে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নজরুল যে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন তারই প্রতিফলন আমরা পাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সংগ্রাম ও কর্মে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে নজরুলকে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে আনা হয়। পরে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অসামান্য ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবি নজরুলের আজীবন সাধনা ছিলো সমাজের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি এবং মানুষের সামাজিক মর্যাদার স্বীকৃতি অর্জন। তাঁর সাহিত্যকর্মে উচ্চারিত হয়েছে পরাধীনতা, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের বাণী।’

তিনি বলেন, ‘নজরুলের ক্ষুরধার লেখনী যেমন ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলো, তেমনি তাঁর বাণী ও সুরের অমিয় ঝর্ণাধারা সিঞ্চিত করেছে বাঙালির হৃদয়কে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় কবির বলিষ্ঠ উচ্চারণ, ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি, আর হাতে রণ-তূর্য’।’

নজরুল প্রকৃতই প্রেমের এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার কবি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে মানবতার জয়গান গেয়েছেন, নারীর অধিকারকে করেছেন সমুন্নত। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি যিনি ব্রিটিশ অধীনতা থেকে ভারতবর্ষকে মুক্ত করার জন্য স্বরাজের পরিবর্তে পরিপূর্ণ স্বাধীনতার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘নজরুল সকল জাতি ধর্ম ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিলেন সাহসের প্রতীক। কবি নজরুল তাঁর প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে এদেশের মানুষকে মুক্তি সংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছিলেন। তার সাহিত্যের বিচিত্রমুখী সৃষ্টিশীলতা আমাদের জাতীয় জীবনে এখনো প্রাসঙ্গিক।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবির জীবনাদর্শ একই দর্শনের ধারাবাহিক রূপ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কবি নজরুলের সাহিত্য ও সংগীত শোষণ, বঞ্চনা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে মুক্তির দীক্ষাস্বরূপ।’

মহান মানবতাবাদী কবি নজরুলের সংগ্রামশীল জীবন এবং তাঁর অবিনাশী রচনাবলী জাতির জন্য অন্তহীন প্রেরণার উৎস এবং জাতীয় জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ। কবি নজরুল শুধু একজন কবি, সাহিত্যিক বা সংগীতজ্ঞই নন, বাঙালি জাতির মুক্তি-সংগ্রামের অকুতোভয় সৈনিক বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং এ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত