ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক গ্রেপ্তারের ঘটনায় সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২০, ০২:৩৪

সাহস ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ। একই সঙ্গে এই আইন বাতিলের দাবিও জানিয়েছে দেশের সম্পাদকদের এ সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (৭ মে) সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।

সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট ও লেখকের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিকতম মামলা ও তাদের গ্রেপ্তার আমরা উদ্বেগের সাথে পর্যবেক্ষণ করছি। গ্রেপ্তার করার আগে অভিযোগের বিষয়গুলোকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। ‘ভাবমূর্তি নষ্ট করা’, ‘গুজব ছড়াতে’ বা ‘সরকারের সমালোচনা’ করার কারণ দেখিয়ে সাংবাদিকদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় না।

“ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে যে কোনো অভিযোগে প্রায়শই স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রেপ্তার পরিচালিত হচ্ছে। সম্প্রতি ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে আদালতে হাজির করার সময় হাতকড়া পরানো হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ মামলার কারণ ক্ষমতাসীন, জেলা প্রশাসন এবং ক্ষমতায় থাকা লোকদের সম্পর্কে সমালোচনা।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইন প্রণেতারা ঐতিহ্যগতভাবে সর্বদা মুক্ত গণমাধ্যম, চিন্তার স্বাধীনতা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার পক্ষে ছিলেন। দুঃখজনকভাবে তাদের কেউ কেউ এখন মিডিয়ার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করছেন। তারা বিদ্যমান মানহানির আইনের পরিবর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা দায়ের করছেন। এটি সুস্পষ্ট যে, সাংবাদিকদের ভয় দেখানো ও হয়রানির জন্যই এই আইনে মামলা করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রকাশ করা এবং প্রশাসনের ব্যর্থতা তুলে ধরা মিডিয়ার সহজাত কর্তব্য ও দায়িত্ব। মহামারি এবং এর বিপর্যয়কর পরিণতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সরকার যখন হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে, তখন এটি আরও প্রয়োজনীয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দমনে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হবে, এই ভয়ে সাম্পাদক পরিষদ শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করছে।

সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, গণমাধ্যমের জন্য আমাদের সেই ভয় এখন দুঃস্বপ্নের মত বাস্তবতা। আমরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক মামলা ও গ্রেপ্তারকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য স্পষ্ট হুমকি হিসেবে বিবেচনা করি। আমরা অবিলম্বে সকল সাংবাদিকের মুক্তি এবং তাদের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। আমরা মিডিয়া এবং সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ঘন ঘন এবং নির্বিচার ব্যবহারের নিন্দা জানাই এবং এই আইনটি বাতিলের দাবি জানাই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত