কর্মহীন হয়ে পড়েছেন গার্মেন্টসশিল্পের অন্তত ১০ লাখ কর্মী

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২০, ১৩:২৭

অনলাইন ডেস্ক

পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর গ্লোবাল ওয়ার্কার্স রাইট ও দ্য ওয়ার্কার রাইটস কনসোরটিয়াম (ডব্লিউআরসি) এর এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিদেশি অর্ডার বাতিলের কারণে বাংলাদেশের গার্মেন্টসশিল্পের অন্তত ১০ লাখ কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

এর ওই গবেষণায় আরও দেখা যায়, বাংলাদেশের ১০ লাখেরও বেশি গার্মেন্টসকর্মী বর্তমানে চাকরিচ্যুত অথবা সাময়িক কর্মবিরতিতে আছেন। এসব মূলত বিদেশি ক্রেতাদের তাদের অর্ডার বাতিল এবং বাতিলকৃত পণ্যের ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ঘটেছে।

গবেষণামতে, যখন অর্ডার বাতিল হয়ে যায়, ৭২.১% ক্রেতা কাঁচামাল যেমন, ফেব্রিকস ইত্যাদির জন্য অর্থ দিতে চায় না। এছাড়া দেখা যায়, ৯১.৩% ক্রেতা উৎপাদনব্যয় বহন করতে রাজি হয় না। অর্ডার বাতিল ও পেমেন্ট না দেওয়ার কারণে ৫৮% কারখানা তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।

গবেষণায়, আরও কয়েক দশক ধরে এই ধরনের অপব্যবহারের ভিত্তিতে নির্মিত একটি সিস্টেমের চূড়ান্ত ভঙ্গুর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে ক্রেতারা সরবরাহকারীদের ওপর প্রদত্ত অর্থ পরিশোধে বাধ্য করে। এরফলে, বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, শ্রমিকদের মজুরি বাকি পড়ে। যেকারণে সঞ্চয়হীন শ্রমিকদের কঠিন বাস্তবতার দিকে ঠেলে দেয়। আর অর্থনৈতিকভাবে খুব বেশি শক্তিশালী নয় এমন সরকারের জন্য এসব দুস্থ শ্রমিক ও শিল্পে ব্যাপকহারে সহায়তা করা সম্ভব হয় না। 

অনেকক্ষেত্রে কিছু ব্র্যান্ড রয়েছে যারা “রেসপন্সিবল এক্সিট” বা অর্ডার বাতিল করলেও দায়িত্ব পালনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকে। যেখানে তারা অর্ডার বাতিল করার পর শ্রমিকদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব কমিয়ে আনতে কারখানাকে সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। তবে গবেষণায় দেখানো হয়েছে, শেষপর্যন্ত তারা কখনই তাদের এই প্রতিশ্রুতি পূরণ কেরে না।

গবেষণাটিতে সুপারিশ করা হয়, সরবরাহকারীদের অবশ্যই এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যে এই ক্রেতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ যেন বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের পেমেন্টসহ সকল আইনত বাধ্যতামূলক মজুরি ও পূরণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়।

একইসাথে, সরকারের পক্ষ থেকে সঙ্কটকালে শ্রমিকদের মজুরি ও কারখানা মালিকদের ভর্তুকি নিশ্চিত করার বিষয়টিও সুপারিশ করা হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারর্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, গবেষণাটি সমপূর্ণ ভিত্তিহীন। একইসাথে তিনি দাবি করেন, এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করার পেছনে কোনও না কোনও দূরভিসন্ধি রয়েছে।

উল্লেখ্য, সরকার গত সপ্তাহে বাংলাদেশে রফতানি-প্রধান শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সঙ্কট থেকে রক্ষা পেতে শিল্প-কারখানাগুলোকে আরও উদ্দীপনামুখী হয়ে কাজ করতে হবে। 

ঢাকা ট্রিবিউন